সেদিন বুকে প্রচন্ড ব্যথা
শ্বাস নিতে পারছি না কিছুতেই
হাপড়ের মতো ওঠানামা করছে বুক
আটকে যাচ্ছে হাঙ্গরের দীর্ঘ চোয়াল


ছুটে গেলাম প্রবল ব্যথায় ডাক্তারের কাছে
এখানে খোঁচা, ওখানে ঘা, বসে থাকে নাড়ি ধরে
পরীক্ষার পর পরীক্ষা, কতো নবতর যন্ত্র
শেষে ঢুকিয়ে দিলো সাদা অজগরের পেটে


ভাবলাম এবার কিছু হয়েই যাবে
পরীক্ষার ঠেলাতেই ব্যথা পালাবে, যাবে কোথায়
বললো ডাক্তার হাসিমুখে, কোথায় ব্যথা
পৃথিবীতে অল্পসংখ্যক সুস্থ্য মানুষের মাঝে আমি একজন


হঠাৎ দৃষ্টি আমার গলায়, কি ওটা, সোনার
কি করে বলি এটাই জীবন, তোমার দেয়া শেষ চিহ্ন
বক্ষে ধরে রাখি সারাক্ষণ, যজ্ঞের ধন
খুলে ফেলুন, খুলে ফেলুন, হারাম অলঙ্কার, এটাই ব্যথা


তারপর কতো বদ্যি কতো কবিরাজ
আসে আর যায়, অর্থ ফুরায়, ব্যথা যায়না
বুকের মাঝে চেপে আছে পাষাণ ভার
নড়াচড়া একদম বন্ধ, মুক্তি কোথায়


হঠাৎ দেখি বুকপকেটে খসখসে আওয়াজ
ঝরাপাতার শব্দ, নদির কল্লোল
হাত দিয়ে দেখি জমে আছে পাহাড় প্রমাণ
একটা একটা করে ভাঙি পাথর, সরাই জঞ্জাল


একটা লাল চুড়ি, বাসর রাতে পরেছিলো বউ
রেখেছিলাম বুকপকেটে চুপিসারে
হায় একি, এযে ঘুঙুর, তোমার পায়ের রুপোর নূপুর
কখন এলো বুকপকেটে, কি জ্বালা


সারারাত ধরে বেরিয়ে এলো শুধু চিঠি, তোমার
আহা কি গন্ধ, ওটা কি? জীবনানন্দ, সুরঞ্জনা
একজন প্রেমিকার খোঁজে আবুল হাসান
তার নীচেই গোপন সিন্দুক ভরে আছে দগ্ধবেলা


বুকের ব্যথা কমে গেছে অনেকটাই হালকা এখন
বুকপকেটে তাকিয়ে দেখি আস্ত একটা নদি
ব্রহ্মপুত্র যমুনা। হাত বাড়াতেই বেড়িয়ে এলো বিশাল
কালো অজগর। কখন কোনবেলায় ঢুকেছিলো অজান্তে


সব ভাসিয়ে দিলাম যমুনায়। শুধু রেখে দিলাম
একটি রেশমি রুমাল, বুকে নক্ষত্রের কারুকাজ
ব্যথাগুলো মিলিয়ে গেছে, একটুও চাপ নেই
এখন আমার চারপাশে শুধুই জলের শব্দ