বহুবার আমি মায়ের চোখে জল দেখেছি,
ঠিক কতোবার জানিনা, হয়তো শতবার অথবা সহস্রবার!
দুইবার দেখেছি প্রিয়জন হারানোর কান্না;
মা তখন অবুঝ বালিকার মতো হাউমাউ করে অঝোরে কেঁদেছেন,
বোকা চোখে আমি তাকিয়ে দেখেছি-
হটাৎ করেই মায়ের এই বালিকা বনে যাওয়া।
প্রায়ই মা মানুষের কথার আঘাতে কাঁদতেন,
প্রত্যুত্তরে বিষবাক্য ছুঁড়ে দেওয়া অন্য রমণীদের মতো তিনি নন,
দৃষ্টিতে তার সর্বদা টলোমলো জল, মুখশ্রীতে ভরা মায়া;
রক্ত পিশাচ মানুষের কটুক্তিতে মায়ের সে কি ভীষণ কান্না!
এই ধরুন বাবার কথাই বলি,
বৃক্ষের মতো কঠিন হয়ে আগলে রেখেছেন আমাদের;
আমি বহুবার সেই বাবার আঘাতে মায়ের চোখে জল দেখেছি,
কারনে-অকারনে আকাশচুম্বী ক্রোধ নিয়ে-
প্রায়ই তিনি ঝাপিয়ে পড়তেন মায়ের নির্লিপ্ত দেহে,
কখনো হাত, কখনো-বা অস্ত্র;
প্রচুর ক্ষত-বিক্ষত দাগ আছে মায়ের শরীরে।
ভীষণ অবাক বাস্তবতা তাইনা?
এই মা! স্বল্প দাহে গলে যাওয়া মোমের মতোন স্পর্শকাতর মা,
আবার বাবার জন্যই কেঁদেছেন অসংখ্যবার,
বাবার অসুখে, বাবার কষ্টে, বাবার ভেঙ্গে পড়ায়-
মা-কেই দেখেছি অকাতরে সবটুকু কান্নার ভার নিতে;
উত্তপ্ত বুকে আমাদের জড়িয়ে ধরে নিঃশব্দে কাঁদতেন তিনি,
অথচ সেই নিঃশব্দ কান্নার প্রতিটি ধ্বনি যেন গুমোট বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয়ে আঘাত হানতো-
আমাদের নরম বুকের গভীরে! (সংক্ষেপিত)