তবু দিনরাত, কত অজুহাত, নিদারুণ কৌশলে,
খুঁজিয়া বেড়াই, মুখটি ফিরাই, তোমায় দেখিব বলে।
শুনো মনোহর, ভারী ঘোরতর, হৃদয়ে অগ্নিজ্বলে,
আর বড়জোর, একটি নজর, তোমায় দেখিব বলে।
তব মমতাজ, নাহি আন্দাজ, আনমনে বৈকালে,
পুলকিত আর, শুধু একবার, তোমায় দেখিব বলে।
জোছনায় মেঘ, চন্দ্রসমেত, তারাগুলো ঝলমলে,  
তারই স্বভাবত, বড় উদ্যত, তোমায় দেখিব বলে।
কামিনীর ফুল, ভবে মশগুল, শিশিরবিন্দু জলে,
অকারণ লাগি,স্বপনেও জাগি,তোমায় দেখিব বলে।
পুবের তপন, সফেদ গগন, মিশিয়াছে এক নীলে,
হিম দিনক্ষণে, দখিনা পবনে, তোমায় দেখিব বলে।
চোখ গেল কই? মেতেছে চড়ুই, ঊষার কোলাহলে,
তারই আহ্বান, নিবেদিতপ্রাণ, তোমায় দেখিব বলে।
ঝিঝির বচনে, বাঁশের বাগানে, শশধর আড়ালে,
শ্রাবণ ধারায়, এক লহমায়, তোমায় দেখিব বলে।
উজানের মাঝি, দুইধার আজি, ভরিয়াছে শতদলে,
সেথা নির্জন, করি বিচরণ, তোমায় দেখিব বলে।
পায়রা ঘুঘুর, দুধেল শিশুর, ফুটিয়াছে হাসি গালে,
নাহি ফরিয়াদ, বড় উন্মাদ, তোমায় দেখিব বলে।
বাসিবার তরে, জল্পনা মোরে, বাঁধিয়াছে শৃঙ্খলে,
নির্বাক সুর, চাহি মঞ্জুর, তোমায় দেখিব বলে।
হৃদয় সমীপে, জীবন প্রদীপে, শিখার অনল দোলে,
করি সমাহিত, নশ্বর ক্ষত, তোমায় দেখিব বলে।
শত অনুরাগভরা ব্রাত্যলিপির,
অমৃতহিয়ার কাব্যসুধায়,
মিতালির ধ্বনি ব্যক্ত করিব, নির্ঘুম অবিরলে,
অনিমেষ উৎকন্ঠা যে মোর, ফাল্গুনী হিন্দোলে।
তোমায় দেখিব বলে,
আমি তোমায় দেখিব বলে।