বুধবার এলেও অলকা হলের দু'তলায় নির্দিষ্ট আসনদুটোয়
আমাদের আর বসা হয়না,
টিকেট কাউন্টারের মামাও আজ আর কষ্ট করে
দুটো টিকেট আলাদা সরিয়ে রাখেনা।
সে দুঃখেই কিনা অলকা হলকে গুড়িয়ে
সেথায় জন্মানো হয়েছে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন।
হিজরাদের মতোই যার একই অঙ্গে দুই রূপ।
তাতে নির্দিষ্ট ফ্লাটে জুটেছে তোমার আবাস।


তোমার কি আর মনে পড়বে;
ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে
প্রতি সন্ধ্যায় ঢেউ তুলত
তোমার আমার প্রণয় স্রোত।


আমাদের প্রণয়ের আভিজাত্যে
হারানো আভিজাত্য ফিরে পেত শশী-লজ, আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল ও
গৌরিপুর লজ। সূর্যকান্ত হাসপাতালে লেগে যেত প্রণয়াসক্তদের ভিড়।
ভিড় এড়িয়েও জমজমাট হয়ে উঠত কেবি ইসমাইল রোড।


আমাদের প্রণয়ের স্রোত বয়ে যেত মহারাজা রোড থেকে
গাঙ্গিনাপাড়, সিকে ঘোষ রোড, রাম কৃঞ্চ মিশন রোডে।
অতঃপর নাহা রোড হয়ে জুবিলি ঘাটে এসে মিশে যেত ব্রহ্মপুত্রের শোকে।
আমাদের কলরবে বুড়া পীর জেগে উঠে ওজু করতে ছুটত গোলপুকুর পার, কিন্তু গোলপুকুরটির সন্ধান করতে না পেরে আবার ঘুমিয়ে যেত।
আঠারবাড়ি মোড়ে বসে আমরাই ছিলাম এসবের প্রত্যক্ষদর্শী।


জয়নুলের সেই কাকটিকে
আমরা অনেকদিন একা একা কাঁদতে দেখেছি।
কাকটি আজো কেঁদে চলে হয়ত নতুন বিরহে
অথবা বধ্যভূমির কঙ্কালের একাকীত্বের যন্ত্রণায়।
কিন্তু তোমার তা আর জানা হবেনা।