হাওরের হই হই হাছনিয় হাওয়া হেরিতে হেরিতে হেলেছিল যার শৈশব
দূরের স্কুলে যেতে যেতে লিকলিকে লতা গুল্ম পুশিদা চুমেছে যার তুলতুলে গোড়ালি
প্রচণ্ড ঢেউ মাড়িয়ে বৃত্তি র বৃত্তকে করায়ত করে
চানপুরের মৌজায় মাখিয়েছিল প্রমিথিসিয় চাঁদের রশ্নি
সুরজ ঢেলেছে ভিটামিন তার মুখে ও মগজে ।
প্রাকৃতিক প্রসাধনে উঠে এসেছিল সে মফস্বল শহরে
আম নিম জাম কদমে ঘেরা মগরা মলয়ের কাছে ,
পিছনে পাঁজর পেটানো
সুরমা-ধনুর ধবল পলি, ডাঙ্গর ঢেউ
হিজল করস চাইল্লা বন
উরগ ও ভেড়ার শান্ত কাফেলা’র কোরাস ।
পতি হয়ে উঠেছিল আদরে পুরুষ
একটা হৃৎহৃৎ হৃষ্টতায় কেটেছে তার সংক্ষিপ্ত যুগল জীবন
হারিকেন কুপি র মৃদু আলয় ফুটায় সে আপন দ্যুতি ,
যেন এক রাবিন্দ্রিক জোনাকি, মিঠমিঠ আশপাশ ।
মনে নেই তার মুখ
সবুজ ভ্রুণ থেকে হাজার দিন কেটেছে আমার তার জঠরের অতি-প্রাকৃতিক নিরাপত্তায়
ও ফিরোজীয়া কোলে ।
মফস্বলের শহরের রিকুজিশন বাড়ির পুরান চালে জ্বালাত সে নীরব জ্যোতি
দেখেছি তবে মনে নেই তাকে, তার নাড়ীছেড়া নক্ষত্র আমি ।
একটা অপূরণীয় হাহাকারে
ভাসন্ত ডুবে জীবন-জঙ্গম পাড়ি দিচ্ছি, যেন এক কুম্ভিক মানব ।
ধুষর-রঙ্গিন শৈশব থেকে আইয়ুব বাচ্চুর সমবয়স অবধি
অনুক্ত সে হাহাকারে রাজসিক-নিরবতার বাজে যেন এক হাওয়াইন সুর ।
জীবন বহেছে জারুল ঝাড়ে, হাহাকারের হাজার হাওয়ায়
সে হাহাকার বেপথু করেনি
সে হাহাকার দিয়েছে ভীত
সে হাহাকার ঢেলেছে মহন-মানস
সে হাহাকার দিয়েছে একাকীত্বের ধ্রুপদি সুর ।
স্মৃতি নেই কেবল জিনের জপন
একটি অদৃশ্য অ্যালিনিয়তায় আসীন সে চারপাশে
তাকে জড়িয়ে জগতে জাগা
আমি মেখেছি তাকে মখমলিয় বিমূর্ততার বনরাজি র মতো
তার নাড়ী নেড়ে নড়েছি, আমি নশ্বর ।
স্মৃতি নেই কেবল জিনের জপন
স্মৃতি নেই কেবল নাড়ীর নড়ন
স্মৃতি নেই কেবল উপলব্ধির উত্তল ।