দয়াল চান মুর্শিদো, আমায় তুমি ক্ষমা করো গো ,
তুমি ছাড়া দুজাহানে, আপন আমার নাইতো কেহ গো ।
আমি কতদিন দেখিনা তোমার, নূরানী ওই মুখ !
যার দিদারে মুছে যায়, অধমের সকল দুখ ,
প্রশান্তির আভা ফিরে পায়, আশেকের দুচোখ ।
তোমার পায়ের ধুলি গো মুর্শিদ, আমার সাত রাজারি ধন !
তোমার জুতায় মুকুট বানায়, পরিতে চায় আশেকেরি মন ,
তোমার পথের গোলাম হয়ে, চাই থাকিতে আমি ,
আমার  কাছে তোমার চেয়ে, নয় তো কেহ দামি ,
তোমার পায়ে চুমু দিয়ে, জুড়ায় আমার প্রাণ !
তোমায় আমি ভালোবাসি, ওগো মুর্শিদ কেবলা জান।
  
                          || ২ ||
তোমায় না দেখলে মুর্শিদ, বাঁচে না আশেকেরি প্রাণ !
তোমার নূরের আলো গো মুরশিদ, আমায় করো দান ,
তুমি আমার সুখের মালা, দুঃখেরো সাথী ,
আমার দুঃখে কাঁদো গো তুমি, নিশীথো রাতি !
তুমি আমার হৃদয়ের ধন, সত্যেরো কান্ডারী ,
তোমার উসিলাতেই, হাশর মিজান দেবো আমি পাড়ি !
তরিকা লইয়া ছাত্তারিয়া, ফুটাইলে তুমি ফুলেরো বাগান ;
মোমেনশাহীর চড়পাড়াতে, ফেরেশতাকুল গাইছে তোমার গান।    
                      
                            || ৩ ||
আমার কাছে তুমি মুর্শিদ, এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আউলিয়া ;
তুমি আমার জিন্দা কোরআন, নবী প্রেমের দরিয়া !
মুর্শিদ আমার কেবলা কাবা, আল্লা পাবার উসিলা ,
মুর্শিদ মাঝে আল্লাহ রাসুল, এতো সত্য প্রেমের লীলা ।
আমার মনের সকল প্রেম-ভক্তি, চরণে তোমার দেবো ঢেলে ,
সার্থক  হবে জীবন আমার, তোমায় আমি পেলে ।
মুর্শিদ তোমার প্রেম-সাগরে, ডুবতে আমি চাই ;
তোমার নায়ে একটু জায়গা, আমি যেন পাই ।


                             || ৪ ||
মুর্শিদ তুমি জান্নাত আমার, সর্ব সুখের ঠিকানা ;
তোমায় পেলে এই দেহ-মন, আরতো কিছু চায়না ।
মুর্শিদ আমার আরশে-আজিম, হাকিকাতে মাদিনা ;
ভেদ জানিতে চাইগো আমি, মারেফত কি জানিনা ।
জ্ঞানের রাজ্যে শিশু আমি, মুর্শিদ আমার মাওলানা ,
অধম আমি মূর্খ আমি, কিছুই তব নাই জানা ।
মুর্শিদ তোমার চরণ সেবে, চাই গো পেতে সবকিছু ,
মম ছাড়বো নাতো দয়াল তোমায়, আশেক হয়ে ঘুরবো তোমার পিছু ।  


                            || ৫ ||
হাদিস কোরান পড়ে মুর্শিদ, কিছুই আমি বুঝিনা ,
জাহান্নামের ভয় করিয়া, ইবাদতের স্বাদ যে আমি পাইনা !
জান্নাতেরি সুখের আশায়, নফস যে আমার আর থাকিতে চায়না ,
প্রেমের সাধনা দাওগো দয়াল, সত্য ছেড়ে মন যে আমার আর থাকিতে পায়না ।
মুর্শিদ আমি বাসিনি ভালো, তোমার চেয়ে কাউকে অধিক ;
তোমার প্রেমে জীবন দিতে, সবকিছুকে জানাই ধিক ।
তোমার চরণ পরেরে পাপোশ টিকেও, রেখেছি আমি যতন করে ,
হৃদয় মাঝে আগলে রেখে, তাঁজিম-চুমু দিয়েছি তোমার তরে ।      


                           || ৬ ||
মুর্শিদ আমার সাধন ভজন, কিছুই তব হয় না !
ইবাদাতে রই পিছিয়ে, আলস্যতা যায় না ,
বেহুশ হয়ে নিদ্রা পরে, রাত্রি আমার যায় যে চলে ;
রুজির তরে সংসারেতে, দিনটিও যায় কাজের ছলে ।


                            || ৭ ||
দয়াল আমায় স্মরণে রেখো, অধম-নাদান ফয়জুরে !
আশেক আমি হইছি তোমার, আগলে রেখো তোমার নূরে ।
খেলাফতের মালা পাবার, যোগ্য আমি নই ;
খাদেম হয়ে  চরন সেবায়, অধম যেন রই ।
মুর্শিদ তোমার ঋণের বোঝা, কি দিয়ে বলো করব  শোধ ?
চরণ সেবার যোগ্য নহি, অজ্ঞ আমি নেই যে বোধ ।


                          || ৮ ||
অবুঝ হয়ে ভুল করিলে, মুর্শিদ তুমি করো ক্ষমা ,
বিপদে পড়ে স্মরণ করে, সর্বক্ষণই পাই যে তোমা ।
ভক্ত যদি রুগ্ন থাকে, দয়াল তুমি শান্তি নাহি পাও ;
খোদার শানে দোয়া করে, বারংবার খুজটি তাহার নাও ।
হৃদয়ে তোমার স্নেহের দোয়া, মুখে শাসন বাণী !
ধর্ম পথে এগিয়ে যাব, এইতো তোমার চাওয়া খানি ।
ভক্ত তোমার কি প্রয়োজন, সবকিছু তার আছে জানা ;
ধৈর্য ধরে থাকলে পরে, পাবে ষোল আনা ।
ভক্ত তুমি না খাহিয়া, থাকলে অনাহারে ,
চিন্তাতে তার ঘুম আসে না, খাইতে নাহি পারে ।
চোখেতে তাহার চোখ রেখো না, কদমে রাখো আখি ;
উচ্চ আওয়াজ না করে ভাই, স্মরণ ভরে আদেশ তাহার দিও তুমি রাখি ।


                           || ৯ ||
কাবাতে হয় শরীয়তো, হেরাতে হয় মারেফাত !
মুর্শিদ আমায় দাও গো তুমি, এই জ্ঞানেরি হাকিকাত ।
মুর্শিদ তোমার জ্ঞানের আশায়, শূন্য থালা যাই নাড়িয়ে,
মুর্শিদ তোমার শুনতে বুলি, মম তৃষ্ণা ভরে রই দাড়িয়ে।
সত্য জ্ঞানের ভিখারি আমি, দিওনা আমায় তাড়িয়ে ।
মুশির্দ তোমায় তাজিম করে, গোনার বোঝা হয়েছে আমার মোচন ,
চরণ সেবার সুযোগ পেলে, চাই গো হতে তোমার মতন ।


                            ||  ১০ ||
পীর মুরিদের বাঁধন ওভাই, বাধা প্রেমের নুরে !
আশেক হলে বুঝবে তুমি, মুর্শিদ তোমার না থাকে ভাই দূরে ।
মুর্শিদ ভুলে ভক্ত যখন, পাপের মাঝে যায় পড়ে ,
স্নেহ ভরে আবারও তোমায়, ফিরিয়ে আনে প্রভুর তরে!
ভক্ত তুমি করছো কি ভাই, মুর্শিদ তোমার সবি জানে ,
খেয়াল করো তার কথার মাঝে, পাইবে খুজে সকল মানে ,
লজ্জা যেন ভক্ত না পায়, তাই তো সে যে এমন করে ;
তোমার দেয়া আঘাত লয়ে, ভান করে সে তোমার তরে!
তাহার মনের দুঃখ ব্যথা, ভক্ত তুমি বুঝলে না রে !
সবার দেয়া আঘাত কি ভাই, দয়াল একা তোমার সইতে পারে ?
চিনলে না ভাই তোমরা তারে, নবী যেমন বাসে ভালো উম্মতেরে !
মুর্শিদ তেমন বাসে ভালো, সবার চেয়ে ভক্তদের ।    


                           || ১১ ||
বারো বছর লাগবে যে ভাই, মুর্শিদ শুধু দেখতে তোমার!
দশক আরো যাইবে চলে, আত্মা কে ভাই চিনতে  তাহার ;
তবু ছাইরো না তার চরণ তুমি, মুক্তি যদি চাও ,
তাহার মাঝেই আছে সত্য লোকায়, চরন সেবে নাও ।