তার কথা আর কি বলবো,
জগত একদিকে আর তাকে একদিকে যদি রাখি,
তবু তার মহত্বের কাছে তাবৎ জগতের ওজন তুচ্ছ,
তার ভালোবাসার কাছে তাবৎ পৃথিবীর ভালোবাসা
নগন্য বিমলীণ।


জন্ম থেকে আজ অবধি তার স্নেহ-আদরের উষ্ণতায়
আমার আত্মার জল-সুপুষ্ট,
আমি তার স্নেহ-ভালোবাসার বর্ননা দিতে যখনই যাই,
পুরো বাংলা একাডেমীর শব্দপুঞ্জে যতো শব্দ আছে,
তার জন্য সে সকল শব্দ
আমার কাছে যথোপযুক্ত বলে মনে হয় না,
আর তাই মাঝে মাঝে ঐশ্বরিক শব্দ খুঁজি।


বেঁচে থাকার কথা কি আর বলবো;
আমাকে এই পৃথিবীর বাসযোগ্য করে যাবার জন্য
তার কত যে আপ্রাণ চেষ্টা ,
হাত ধরে হাঁটা শেখানো,সাঁতার শেখানো,
মুখে তুলে খাওয়া শেখানো,
আমায় পিঠে নিয়ে ঘোড়া ঘোড়া খেলা শেখানো,
আমি দৌড়োতে গিয়ে ব্যথা পেলে
তার বুকের পাঁজরে আমার চাইতে বেশী ব্যথা পাওয়া
এ আর নতুন কি।
এখনও তা চলছে,
কোথায় আছি কেমন আছি,
এখনও প্রতিদিন তার কাছে আমার এর প্রতিবেদন দাখিল করতে হয়।


তার কাছ থেকে প্রথম অ-আ-শিখেছিলাম বলেই
আজ আমি আর দশটা মানুষের চাইতে আলাদা;
ভাল-মন্দের পার্থক্য করতে জানি,
মিথ্যের ধারে কাছে যাবার সাহস আমার হয় না,
তার জন্য কেবল তার জন্য আজ আমি আমার গাঁয়ের
সব চাইতে বড়ো শিক্ষিত-লোকে আমায় সমীহ করে।


তার কাছ থেকে প্রথম ন্যায় নীতি শিখেছিলাম বলে
অন্যায় প্রশ্রয় দিই না-বলতে পারি
ইউর অনার আমার মক্কেল নির্দোষ,
কিংবা আমার মক্কেল একজন সত্যিই দোষী ব্যক্তি,
তাকে শাস্তি দিন।


আমার মায়ের প্রতি তার চির সতেজ চাহনী দেখেছিলাম বলে
আমি ভালোবাসা শিখেছিলাম শৈশবেই,
নারীকে দিতে শিখেছি শ্রদ্ধা,
জীবন পাতায় তার কঠিন কঠিন অংকের সমাধান করন
দেখেছিলাম বলেই হয়তো,
বা জীবন পাতার ভাঁজে ভাঁজে তার সুনন্দ কাব্য লেখন
দেখেছিলাম বলেই হয়তো আজ আমি কবি।


তাকে ও তার সততা ব্যক্তিত্বকে আমি শ্রদ্দা করি,
আমার ছেলে তার গলা জড়িয়ে ধরে আধো আধোস্বরে
বলে,দাদা ,আমিও তোমাকে ভালোবাসি।


আসলে তাকে নিয়ে এতো লেখা যায় যে,
তিনি বিদায় নিলেও আমার মৃত্যপর্যন্ত,
আমি তার কথা লিখে শেষ করতে পারবো না,
জীবনে শুধু একটি বাক্যই শেষ করতে পারবো
আর তা হলো-
আমি তাকে তার চাইতে বেশী ভালোবাসি।


হ্যাঁ,বাবা,আমি তোমায় সত্যি ভালোবাসি।