অতৃপ্তি আমার থেকেই যায়
যখন আত্মার ভেতর থেকে এখনও ভেসে শ্বাপদের শব্দ
শকুন কিংবা হায়েনার মর্মভেদী চিৎকার
স্টেনগান গ্রেনেডের শব্দের মতন পেট্রোল বোমার শব্দ
এসে আমার অস্তিত্বকে নাড়িয়ে দিয়ে যায় বারবার
তখন এই প্রশ্নটি আমার খুব মনে জাগে,
আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা কি এর জন্য সেদিন হাতে নিয়েছিলেন অস্ত্র?
যখন চারিদিকে পক্ষ-বিপক্ষ শক্তির স্বাধীনতা নিয়ে চলে তুমূল উন্মাদনা
পাঠ্য বইয়ের পৃষ্টাজুড়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চলে রাজনৈতিক নোংড়া খেলা
পটপরিবর্তনের সাথে পালটে যায় শিশুদের ইতিহাস
নিজের মত করে লেখা হয়
প্রকৃত ইতিহাস বিপন্ন হয়ে যায় নিজস্বার্থের কাছে
তখন আমার মনে এই প্রশ্নটি জাগে বারবার
হে মুজিব হে জাতীয় চার নেতা তোমরা কি এই চেয়েছিলে ?
যখন বারবার সংবিধান ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে এই মাটি এই দেশ
আর্জেস গ্রেনেড -দশট্রাক অস্ত্র-সিরিজ বোমা-রমনার বটমুলের বিচার নিয়ে
খেলা হয় ছিনিমিনি খেলা-মননের সংঘাতে আগুন লাগে
রক্তের বন্যায় ভেসে যায় প্রিয় মাতৃভূমি
সূদীর্ঘ বিয়াল্লিশ বছর চলে যায় যুদ্ধাপরাধিদের বিচার হতে
তখন আমার মনে এই প্রশ্নটি জাগে
হে আমার শহীদ ভাইয়েরা সম্ভ্রম হারানো বোনেরা ছেলে হারা মায়েরা তোমরা কি এই চেয়েছিলে ?
যখন ফেলানির লাশ ঝুলে থাকে কাঁটাতারে
অসংখ্য রাজন নাখেয়ে থাকে রাস্তার ধারে - অহেতুক হত্যা করা হয়
সাগর-রুনির ছেলে হয় পিতামাতা হারা
তখন আমার মনে এই প্রশ্নটি জাগে
হে রাসেল তোমার রক্ত কি এই চেয়েছিলো, এই জন্য কি ছেয়েছিলো সারামেঝ জুড়ে?


আমার অতৃপ্তি থেকেই যায়
বারবার তোমাকে বলতে ইচ্ছে করে হে মুক্তিযুদ্ধ!
তোমার এভাবে না শেষ হয়ে যাওয়াটা উচিত ছিলো না
এই মিথ্যের ভীড়ে যখন আমাদের মননের চৈতন্য জাগতো
যখন আমাদের জানা হতো স্বাধীনতার মূল্যবোধ
তখন কেবল শর্তসাপেক্ষে তোমার দিয়ে যাওয়া উচিত ছিলো স্বাধীনতা।
আমরা যে আজ বড়ো নিষ্পেষিত-বন্দী আছি দ্রোহের কারাগারে।