[অসমাপ্ত – ১৩]
বহু বছর পর হঠাৎ
বইমেলায় তোমার সাথে দেখা হয়ে গেল,
একটা স্টলের কোণায় দাঁড়িয়ে তুমি
উল্টাচ্ছিলে কবিতার বই,
আর আমি ঠিক পাশেই
নিজের বুকের শব্দ শুনছিলাম ঘন ঘন—খুব জোরে।
তাকিয়ে দেখলে,
একটু চমকালেও মুখে ছিল অভ্যস্ত এক হাসি—
যেমন অচেনা কেউ দেখে হাসে,
কিন্তু চোখে ছিল এক চিলতে শীতের কুয়াশা।
তুমি জিজ্ঞেস করলে "কেমন আছো?"
আমি বললাম, "ভালো",
মিথ্যা বলতে গিয়ে গলা একটু কেঁপে গেল,
তুমি কি টের পেলে?
তুমি বললে,
"এই বইটা বেশ ভালো,
ভালোবাসা নিয়ে খুব সুন্দর লিখেছে..."
আমি বইটা হাতে নিলাম,
ভেতরের একটা পাতায় লেখা—
"ভালোবেসে আমি আজ পাথর হয়েছি "
তুমি চলে গেলে ধীরে ধীরে,
পেছনে তাকালে না একবারও,
আমি দাঁড়িয়ে রইলাম,
চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে,
ঠিক তখনই
বইয়ের ভেতর পাতার ভাঁজ থেকে
এক টুকরো বাতাস এসে বলে গেল—
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
[অসমাপ্ত – ১৪]
আজ রাতের আকাশটা রড়ই অদ্ভুত
চাঁদ নেই, তারা নেই, শুধু একটা শূন্যতা,
যেটা কেমন করে যেন
তোমার না-থাকাকে মনে করিয়ে দিল।
আমি জানালায় পাশে বসে
শুনছিলাম দূর থেকে ভেসে আসা ট্রেনের শব্দ,
তুমি তো বলেছিলে,
ট্রেনের শব্দে নাকি একরকম বিদায়ের গল্প থাকে।
যে রাতেই তুমি চলে গেলে
একটা শব্দ রেখে,
আমি বুঝিনি ঠিকমতো—
বা বুঝে চুপ করেছিলাম,
যেমন আজও চুপ করে আছি,
তোমার প্রোফাইলের পাশে সবুজ আলো জ্বলে উঠলেও।
সবকিছু এখন অনুচ্চারিত থেকে যায়,
এই শহর, এই আকাশ,
আর আমার মুঠোফোনের সেই মেসেজ বক্স—
যেখানে শেষ কথা ছিল, "ভালো থেকো"
আমিও লিখে ছিলাম,
"তুমিও..."
যেটা আর পাঠানো হয়নি কোনোদিন।