[অসমাপ্ত – ৭]
আজ সকালে বইয়ের ভাঁজে
তোমার প্রিয় গোলাপী রুমালটা পেলাম।
রঙ প্রায় মুছে গেছে,
তবু তার গন্ধে কোথাও যেন
একটা বসন্ত আটকে আছে,
তুমি যেমনটি রেখে ছিলে,
অর্ধেক শব্দে, অর্ধেক চুম্বনে।
আমি চমকে উঠিনি,
শুধু জানালাটা খুলে দিলাম একটু,
যাতে হাওয়া এসে
তোমার নামটাকে আবার
ঘরের কোনায় এনে রাখে—
চুপিচুপি,
যেন তুমি জানতে না পার ৷
এইসব দিনে,
আমি আর প্রতীক্ষা করি না,
তবে প্রতি সন্ধ্যায়
খাতায় একটা নতুন পাতা খুলে রাখি—
যদি কোনোদিন ফিরে এসে
তুমি আবার প্রথম লাইনে লেখো—
"আমি এখনও..."
[অসমাপ্ত – ৮]
আজ হঠাৎই রাস্তায়
একটা কুর্চি গাছের নিচ দিয়ে হাঁটছিলাম।
মাটিতে সাদা পাঁপড়ির স্তর,
আর হাওয়ায় ভেসে আসা সেই চেনা গন্ধ—
তোমার ওড়নার এমনই ছিল
এক বসন্তের দুপুরে।
আমি থমকে দাঁড়ালাম না,
তবে পা চলা কমে গেল নিজে থেকেই,
যেন স্মৃতির ভেতর হাঁটছি—
না বলা কথার মধ্যে দিয়ে,
যেখানে তুমিও ছিলে,
একটু দূরে, কিছুটা চুপচাপ।
আশেপাশে কেউ ছিল না,
তবু মনে হচ্ছিল
কেউ পাশে হেঁটে যাচ্ছে—
আমার মতোই ধীরে ধীরে।
ফিরে তাকাইনি।
কারণ আমি এখন জানি,
সব অনুপস্থিতি
হারিয়ে যাওয়ার নয়—
কিছু কিছু অনুপস্থিতি
অবস্থানের মতো চিরকাল থেকে যায় ৷
[অসমাপ্ত – ৯]
গতরাতে তোমাকে স্বপ্নে দেখলাম,
না, মুখটা স্পষ্ট ছিল না—
তবু জানতাম, তুমি।
তুমি এসেছিলে নিঃশব্দে,
একটা হলুদ আলোয় দাঁড়িয়ে,
চোখে ছিল না কোনো অভিযোগ,
নয় অনুতাপ,
শুধু একরাশ শান্তি—
যা আমরা কোনোদিন ভাগ করে নিতে পারিনি।
তুমি কিছু বলোনি,
শুধু হাতটা বাড়িয়ে দিলে—
আমি ধরতে গেলাম,
আর ঠিক তখনই
জেগে উঠল ভোর।
ঘড়ি বলল, সকাল ছ’টা।
আমি জানি,
এই স্বপ্নগুলো মিথ্যে—
তবু সেই মিথ্যে স্বপ্নঘুম
সবচেয়ে সত্যির মনে হয়।