কিছু একটা ভেঙে যাচ্ছে
কোনো ঘড়ির কাঁচ,
কোনো সম্পর্কের ছাঁদ,
টেবিলে রাখা কাপটা নয়,
ভেঙে যাচ্ছে নৈঃশব্দ্যের দেয়াল,
দেয়ালের ওপারে কে যেন কাঁদছে।
কিছু একটা ভেঙে যাচ্ছে
বারবার—অস্ফুট, নিঃশব্দে—
ভেঙে যাচ্ছে রাত, ধর্মীয় সম্প্রীতি,
ভেঙে যাচ্ছে মাটির কলস,
যার ভিতরে স্বপ্ন রাখা ছিল,
ভেঙে যাচ্ছে শিশির, বাবার ফটো ফ্রেম ৷
কে যেন হাঁটছে পেছনে,
ভাঙা ইঁটের উপর পা রাখলে
শব্দ হয় না আর,
শব্দগুলোও ভেঙে গেছে,
মনের ভেতরে ফাঁকা পড়ে আছে
স্বরবর্ণ , ব্যঞ্জনবর্ণ ৷
ভেঙে যাচ্ছে প্রতিদিনের পত্রিকার খবর,
ভেঙে যাচ্ছে তারিখ, উৎসবের আমন্ত্রণ ,
ভেঙে যাচ্ছে ভোটের প্রতিশ্রুতি,
ভেঙে যাচ্ছে “সর্বহারা” শব্দের আত্মা।
ভেঙে যাচ্ছে ভালোবাসা—
সে আর নেই মোবাইল রিংটোনে,
ভেঙে যাচ্ছে অভিমান,
কেননা এখন আর কেউ অপেক্ষা করে না।
ভেঙে যাচ্ছে বেঁচে থাকা,
ভেঙে যাচ্ছে স্বপ্নের শান্ত দুপুর
ভেঙে যাচ্ছে শপথ, জাতীয় পতাকা,
ভেঙে যাচ্ছে স্বদেশ—
তার বুকের ভেতর ধস নামছে নিঃশব্দে।
আমি দাঁড়িয়ে শুনি এই ভাঙচুরের আওয়াজ
তবু কেউ বলে না—
কী ভাঙছে?
কেন ভাঙছে?
কে ভাঙছে?
শুধু দেখি
ভাঙনের ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছে আমাদের চোখ
আমাদের মুখ, আমাদের ইতিহাস
কিছু একটা ভেঙে যাচ্ছে,
আর আমরা সরু চোখে দেখে যাচ্ছি
পলক না ফেলেই।