ধরাতে মানব মনে কী করে পোষণ ?
যখন হ’তে স্থাপিত, তার স্থায়ী শ্রেষ্ঠ আসন ৷
অবনী পরে ঘটিছে আজ, সর্বমুখী মহাআলোড়ন
ধরার উপরে চলে, মানবের লাগাম হীণ শোষণ !
আস্বস্ত হয় কী সে তার কাজে ?
দেখি সর্বদিকে, মহামারি রূপে যাহা ঘটিছে !
ঘটনা কিনা ঘটিত, অনেক কিছু বহু বাজে ,
এই সুসভ্য মানব শাসিত অধুনা তার সাম্রাজ্যে !


যে প্রকৃতি মা স্বরূপা, ইন্ধন যোগায় মানুষকে,
আজ তাকে বেদনা ভরায়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে !
মানবের যতো দম্ভ ,বল-সাহস-কৌশল-ছল ,
প্রকৃতিই এসবের উৎস, তাকেই করিছে বেহাল !
সন্তানসম আচলে ঢাকিয়া শান্তির নীড়ে ,
প্রকৃতির বাসনা সব থাক, চিরসুখে জীবন ভরে ৷
নব নব রূপে ধরাতে চায়, পুরিতে অতি
চায়, মনোমোহিনী রূপে, ভরুক তার প্রকৃত আকৃতি ৷
কিংকর্তব্যবিমূঢ় পলকহীণ নেত্রে চেয়ে রয় প্রকৃতি ,
যা কিনা উদয় জঘন্যতম, জীব অহিতে বিকৃতি !
ভয়ানক পাহাড় পরিমাপ শস্ত্রের ভাণ্ডার
প্রতিদিন আরো ভরে, নাম নেই থামার !


বিজ্ঞানের সুবুদ্ধির, এ তো নয় শুভপরিচয় ,
নিছক কাজে মানবশক্তি, করিছে সে অপচয় !
দূষিত করে তোলা জল-মাটি, আলো হাওয়া
কেন এহেন কর্ম, কোলে তুলে নেওয়া ?
রূপ-রস-গন্ধ সহ আরও কিছু চাওয়া ,
যার সূত্র ধরে এ মানবে তার প্রাণধন পাওয়া !
পুনঃ, কেন মাতে মনেতে পুষে মূঢ় বিচার
অহরহ বিধ্বংসে ধাবিত সে, হয়ে সোচ্চার ?


একক মানব দেহ হ’তে একই রূপে
চায় বিজ্ঞান, হোক উদয়মান এ বিশ্ব সমীপে ,
কোষিকার মূল বীজ করিয়া ক্লোন
ধরায় চায় নব নব মনুষ্যের প্রতিফলন ৷
সেথায় অক্ষুন্ন থাকে কী ! মানব জীবনী ধর্ম
বজায় থাকিবে কী, মানবতার সঠিক মর্ম ?
ভেদাভেদ শূন্য, সমতা সততা ভাইচারা
উন্নতির পরম সোপান পার হবে কী তারা ?
মানবে স্থূল জড়বত নির্জীব যথা
না ঘটে বিকৃতি অন্য জীবে দেখি হেথা !
তবু বাসনা নানা, দেখাবে বিজ্ঞান তার জয়
কিন্তু পারে কী দিতে অভয়  ?
ধরায় সজীব ধারায় বহিবে প্রবল
মানবতার নিহিত গুণে ধাবিত হবে সকল ?


যদিও, তার জয়রথ উড়িয়ে ধ্বজ
মানব যা কিছু ঘটায় বিশ্বময় আজ ,
বিস্ফারিত নেত্রে দেখি ভূবন মাঝ
অসাধ্য সাধন সে সব মানবের অদ্ভূত কাজ !
জলজ-জীব, কীট-পতঙ্গ, পশু পক্ষী, উদ্ভিদ
সবারে নাড়িয়ে ছাড়ে তার আদি ভিত ,
এদিকে “ওজন” পরত আকাশে হয় ঘনীভূত
পৃথিবীর কণ্ঠ আজিকে রুদ্ধ হওয়ার মত !


মরুতে রূপায়িত আজিকার গহন বন
বৃদ্ধি তাপমানে ঘটে মহা জলপ্লাবন ৷
কুটিল ছলনায় আজ ছলিছে ভূবন ,
আরও মানবের ধ্বংসসম অহরহ টানে মন ৷
সত্য সুখ যেটা, চাওয়াটা ধর্ম পরম,
তবু কেন করা, এহেন হীন করম !
মানবতা খর্ব হওয়ার কী সে কারণ
বোঝে না, সে স্বয়ং করে অশুভ বহন ?


এখন প্রশ্ন সম্মুখে দণ্ডায়মান
যারা পেয়েছে উচ্চ বর্গের প্রাণ ,
“হাইব্রীডে” সত্য গুণধর্ম নিরেট যাহা খাঁটী
সম্পূর্ণ মূল্যবোধ থাকে কী পূর্ববৎ পরিপাটি ?
যার নিদর্শন ফলে ঐ শাক-সবজি মুর্গী,
তারা বাঁচে বিকৃতির নানারূপে হয়ে সহভাগী !
ঘটে যদি কোন কালে ,মানবে এ দশা ,
ভূলে মানব কী, মনে পোষে সে আশা ?
মানব কি ভোলে ,তার আদর্শ ভাবনাময়
অমূল্য যার বিচার ভরে আছে মানবালয় ?
সততা করুণা মোহ-মায়া, ক্ষমা ত্যাগ দয়া
এ সবে না হয় যেন, কোথাও সে অপয়া !
চাই, বেঁচে থাক মানবের হৃদয় সম্পদ
বাঁচার অধিকার অটুট থাক চিরতরে সুখদ ৷
মানব জীবন ভরা গুণে, স্মৃতি মেধা পরম ধন ৷
মানব যেন কক্ষনো না হয় আনমন
নিজ নিজ ধৈর্য বিবেক-বুদ্ধি করিয়া যতন
সর্বদা জাগ্রত থাক ধারণে শুভলক্ষণ ৷


চন্দ্র সূর্য তারা নীহারিকা, উদয় ও অস্ত হওয়া ,
ঝঞ্ঝা-ঝড় বিদ্যুৎচ্ছটা মেঘাড়ম্বর ,মলয় হাওয়া ৷
কল্লোলিত রবে বয়ে চলা সে তটিনীর ,
যে মহাগর্জন কানে ভাসে সাগর ঊর্মীর ;
তুষারে ঢাকা পর্বত, শুভ্র বর্ণা
উচ্ছ্বসিত কলকল বেগে বহে ঝর্না ৷
সাজিয়ে ডালা কাননে ভরা ফুলের বাহার
প্রকৃতি দানিয়াছে তার শ্রেষ্ঠ উপহার ,
গুঞ্জরিত মৌমাছি ভ্রমর, তারা খোঁজে আহার
দেখিয়া নয়নাভিরাম দৃশ্যে মন কাড়ে সবার !
সবুজ ঘনবন তলে কতনা বাস্তব ছবি
লতাগুল্ম সাদরে জড়িয়ে শোভে অটবী ,
সবে মিলে প্রেম ভালবাসায় ভরিয়ে সমাজ
স্বধর্মে অক্ষয় হয়ে বেঁচে থাক প্রকৃতি মাঝ
চিরতরে থাকুক বিদ্যমান, মানবের অনুভব সবি
কদাপি মানব দ্বারা ক্ষতি, না ঘটে এ পৃথিবী ৷


(ইং-০৮-০৩-২০১৬-মঙ্গলবার)