এ জীবনে তোমার চাওয়া পাওয়ার পরিসমাপ্তি,
এবার তো তোমার উৎসের মুখে ফেরার পালা।
তোমার সামনে নৌকা প্রস্তুত।
কি ভাবছো? ভয় করছে?


আবহাওয়া বার্তায় বেড়েছে পারদ, উচ্চ হয়েছে গ্রাফ,
কই কমেছে কি ভাইরাসের প্রকোপ?
স্পর্শ হীন অবিকৃত মৃত দেহের স্তূপাকার চিত্র
কতটা শূন্য হয়েছে বলতে পারো? বরং বেড়েই চলেছে মৃত্যুর সংবাদ।
আপন জাতির মৃত্যু সংবাদে আমার আর ঘুম আসে না,
মনের ভিতর চলছে ভয় আর সংশয়, সঙ্গে স্বজাতি হারানোর বুক ফাটা কষ্ট।
আজ শহরের নির্জন রাস্তা গুলো প্রমাণ করে মানব জাতির হিংস্রতার ফল।
মনের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ায় শুধু শব্দ কারী মৃতের সকট।


জানি না এই মহামারী পরিকল্পিত ঘটনা, নাকি অঘটন...!
তবু এখন দরজায় পড়েছে খিল,
চৌকাঠে পোঁতা আছে কালের শেষ খুঁটিটা,
যাকে অতিক্রম করার সাহস আমাদের কারো নেই।
যাকে পেরোলেই হবে সব অতীত ইতিহাস, ভবিষ্যতের সব স্বপ্ন শেষ।
আমরা শ্রেষ্ঠ মানবজাতি হয়েও এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরজীবি ভাইরাসের কাছে হয়েছি পরাজিত।
তবুও চেষ্টা ছাড়িনি, চলছে লড়াই, জীবন-মৃত্যুর অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।
জয় টা হয়তো এক বিমূর্ত কল্পনা হবে মাত্র।
তাই এজন্য দু-দণ্ড নয়, দু-এক দিনের ধৈর্য্য নয়,
টানা একুশ দিনের ঘর রুদ্ধ অবসরে থাকার ধৈর্য্য দরকার।


আজ জীবনে উচ্ছ্বাস এর নদীটা ঢেউ হীন,
রঙিন স্বপ্নটা নির্বাক চিত্তে প্রাণ হীন,
গোধূলির রঙ টা ফ্যাকাসে বর্ণ হীন।
এরই মাঝে সময় নামক ঘড়ি টার দিকে তাকিয়ে শুধু অপেক্ষা আর অপেক্ষা।
মৃত্যু পুরীর দিকে কান পেতে শুধুই বসে থাকা, শুধুই বসে থাকা।
দূরে পাতা বিহীন লাল পলাশ গাছটার দিকে নির্বাক চিত্তে চেয়ে থাকা,
কখনো কখনো ক্যানভাসের পিছনে উঁকিমারা আকাশটার দিকে তাকিয়ে
কিছু বলতে ইচ্ছে হয়।
এখনও বাকি আছে, এখনও বাকি আছে, আমরা এখনও জীবিত আছি,
মরিনি.... মরিনি.... ।


শরীর থেকে নিঃশ্বাসের মতো যারা হারিয়ে যাচ্ছে
হয়তো তারা আর ফিরে আসবে না!
চোখের সামনে থেকে যে সব বর্ণ গুলো হারিয়ে যায়
তারা আর কোনদিন বাক্য গঠনে আসে না।
আজ এই স্বপ্নের মরুভূমিতে রূপ-রস-বর্ণ-গন্ধ সবই হয়েছে অদৃশ্য।
মানবতা হীন অনুভূতি গুলো ক্ষমতা আর স্বার্থ রক্ষার লড়াইয়ে
অচিরেই অর্থ হীন মেঘ হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
সময়-স্রোত-ইচ্ছা-স্বপ্ন কেউ কারোর জন্যে অপেক্ষা করে না,
তাই এই উৎকণ্ঠার সময়টা হয়তো অচিরেই কেটে যাবে!
আর যারা জীবিত আছে, থাকবে, তারাই সৃষ্টি করবে
কালো রাতের অবসানে এক নতুন প্রভাতের।
তাইতো মগজে কারফিউ আর বাউলের একতারার সুরে
আঙুলের মেরুদন্ড হিলনে উতরে যাবে এই মহাকালের দূরাবস্থা।
"তাইতো আজও অপরাহ্নে আমরা তাঁর চরণে প্রার্থনা রত, তাঁর কাছেই চির ঋণী"।।