ছোট বেলায় দেখা
এক বাংলা সিনেমার হারিয়ে যাওয়া জমজের মতো
আমারও একজন জমজ আছে বলে আমার বিশ্বাস।
সেই বাংলা সিনেমা দেখার পর মায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম,
আমার কোনো জমজ আছে কিনা?
মা শুধু রহস্যময় হাসি দিয়ে বলেছিলো,
-আছে নিশ্চই কোথাও!
তারপর থেকে মনে মনে ‌অস্হিরতায় কাটাই দিন রাত্রি,
যেখানেই যাই
আমার মতো দেখতে কেউ আছে কিনা শুধুই খুঁজি।
হঠাৎ আয়নায় ‌অথবা জলে চোখ পড়লেও আঁতকে উঠি,
আমার জমজ ভেবে ভুল করি।
ভয় পাই এক বোকা আতংকে
‘আমার জমজ না জানি আমার সব দখলে নেয় একদিন’
তবুও কি এক অদ্ভুত মায়ায় তাকে খুঁজি।
দিনের পর দিন মানুষের মুখের ভীরে তাকে খুঁজতে গিয়ে
অনেক মানুষের চেহারায় দেখলাম
কাঠের মাছরাঙা পাখি,
চীনামাটির তৈরী লাল আপেল,
কাঁচের বৈয়ামে আটকানো জলপরী,
আলাদিনের চেরাগে বন্দি দৈত্য,
রঙচটা ডুবরিপোশাক
অথবা একটা শূন্য ব্ল্যাকবোর্ড।
এভাবে দিনের পর দিন তাকে খুঁজতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে কিছুদিন হয়তো ঘরে আটকে রেখেছি নিজেকে,
তারপর আবার নতুন এক উদ্দ্যোমে আমার জমজকে খুঁজতে
পথে বেরিয়ে পড়ি এক বিষণ্ণ মায়ার অস্পষ্টতায়।
দীর্ঘদিনের বিফলতার পরও লেগে থাকি আমার জমজ খুঁজতে
জেদী এক অভিযাত্রীর মতো।
ইদানিং একটা গোপন হাসি হেসে ফেলি আয়নায় অথবা জলে তাকালেই।
টের পাই বুকের ভিতর
এক মুক্তিহীন চেষ্টায়
কিভাবে নিজের জমজ খুঁজতে খুঁজতে  
আমি নিজেই
আমার জমজ হয়ে বসে আছি অনেককাল আগে!
বাংলা সিনেমায় যে গল্পটি ছিলোনা তাই ঘটল আমার জীবনে!
আমার জমজ এখন আমার সব কিছুই তার দখলে নিয়েছে,
আর আমি এখন সেই ঘরের ভেন্টিলেটরের ভিতর আটকে থাকা
এক নিঃসঙ্গ টিকটিকি।
——————-
র শি দ  হা রু ন
১৪/০১/২০২১