এই যে আমার পাশে যে ছায়া দেখছেন আপনারা
এই ছায়া আমার নয়,
এটা আসলে একটা বাড়ির ছায়া।
খুবই অবুঝ একটা বাড়ি,
আমাকে দেখলেই ছোট বাচ্চাদের মতো কান্না জুড়ে দেয় আমার সাথে আসার জন্য;
একসময় মনিবভক্ত  পোষা কুকুরের মতো নিঃশব্দে আমার পিছনে হাঁটা শুরু করে।


আমি এই ১০৭ নং উত্তর যাত্রাবাড়ির ভাড়া বাড়ির নিচ তলায় জন্মেছিলাম।
বিয়েশাদি এই বাড়িতে হয়েছে,
বাবা মারা গেছেন এখানেই
আর আমরা এখন অন্য মহল্লায় থাকি  নিজেদের বাড়িতেই ।


আমার মতো এই বাড়িটির শরীর মনেও  বয়সে ধরছে,
আমার ঝরেছে মাথার চুল, ফ্যাকাশ হচ্ছে গায়ের চামড়া
আর বাড়িটির আস্তর আর রঙ।


অনেকটা বাধ্য হয়ে প্রায়ই সবার অগোচরে
‌অবুঝ বাড়িটিকে
আমার নিজের ঘরে নিয়ে আসি বুকে করে,
তারপর তার শরীরের সমস্ত শ্যাওলা পরিষ্কার করে
নতুন রঙ করে ফিরিয়ে দেই  আগের মতো করে।


কখনো যদি ভুল করে ( পড়তে হবে ইচ্ছে করে)
কখনো সেই  বাড়ির পাশ দিয়ে ঘরে ফিরি
তখনই বাড়িটি  
বরাবরের মতো পিছ পিছ চলে আসে ছায়া সেজে।


যদিও আমি এখন অন্য মহল্লায় আমার নিজের ঘরেই থাকি,
আর সেই বাড়িটি একজায়গায়ই দাঁড়িয়ে আছে আটচল্লিশ বছর যাবত।
তবুও আমি আর আমার বেড়ে ওঠা সেই ভাড়ায় থাকা বাড়িটি
দুজন দুজনের  বুকে আটকে গেছি সারাজীবন ধরে।
——————
র শি দ  হা রু ন
১৯/১১/২০২০