দুহাজার বাইশে
পরিচিত অ‌পরিচিত কোনো বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ দেখলেই আমার মনে অশান্তি শুরু হয়!
রেল লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ছুটন্ত ট্রেন দেখলেই
আমার হাহাকার বুক ফুঁড়ে ছুটতে থাকে সেই ট্রেনের পিছন পিছন।
পরিচিত মানুষের বুকফাটা  চিৎকারে আমার শরীর মন ভিজতে থাকে দিনরাত।


সমুদ্রের ঢেউ আমার ভালো লাগেনা ,
গাছের সাথেও থেকে দেখেছি মন টানে না,
স্টিমারে চড়ে মাঝ নদীতে আকাশের চাঁদ আর জলে কাঁপা চাঁদের ছায়াও দেখেছি-
আমার সহ্য হয়নি সেই দৃশ্য।
একা একা বিকেল বেলা এক কাপ চায়ে চুমুক দিয়ে দেখেছি
বিষাদের স্বাদ লেগে থাকে সেই চায়ের কাপে।


আমি কোনো পীর ফকির বা ঋষি নই,
তবুও কোনো এক গায়েবি ডাকে মন ভালো হতে শুরু করে!
সেই ডাকে আমি চলে যাই ঢাকা শহরের যাত্রাবাড়ির ওয়াসা রোডের একশ সাত নং বাড়ির দরজায়।


পড়ন্ত বিকেলে সেই বাড়ির গলির রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমার লম্বা ছায়াটা সূর্য ডুবার সাথে সাথে হারিয়ে যায়,
এই দৃশ্যটা আমাকে খুব ভাবায়।
আমি নিজের জীবন খুঁজতে শুরু করি সেই দৃশ্যে।
সেই সময় ঘরে ফেরা
কোনো চড়ুই, কাক, বিড়াল অথবা গলির কুকুরটার মাঝেও আমাকে দেখতে পাই।


যদি কোনো দিন সেই বাড়ির দরজা খুলে উনিশ শতকের পঁচাশি -সাতাশি সালের দিকের
আমার মতো দেখতে এক কিশোর আমাকে তার বুকে আগলে নেয়,
সেই মুহূর্তটা মৃত্যু থেকে টেনে তখনই আমাকে জীবন্ত করে ফেলে ।


তাই এক দীর্ঘশ্বাসের চেয়েও দীর্ঘ এই জীবনটা এখনো পালছি সেই বাড়ির দরজায় উকি দিয়ে
মাঝে মাঝে  নিজেকে দেখে নেয়ার জন্য।


এই দৃশ্যটাই দুহাজার বাইশে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দেয় আমাকে।
—————————-
র শি দ  হা রু ন
০৭/১০/২০২২