বয়স উনিশ হতে হতেই মেয়েটি
নিরানববইটা চিঠি পেলো।
নামে বেনামে রংবেরঙের খামে ভরা এসব চিঠি।
সে কখনো খামও খুলেও দেখেনি সাহস করে!!
মা বলতেন- ভালো মেয়েরা বিয়ের আগে অন্য ছেলেদের চিঠি পড়েনা,
বিয়ের পর শুধু স্বামীর চিঠি পড়ে।


তবুও চিঠি পেতে কি যে ভালো লাগতো।
জমিয়ে রাখতো সকল চিঠি একটি পুরাতন স্টীলের আলমারীর সিন্দুকে।
বিভিন্ন রংগুলো এমনভাবে সাজিয়ে রাখতো
-মনে হতো একটা অলস রংধনু শুয়ে আছে সেখানে।
এই চিঠিগুলোকে আমরা বলি-
লাভ লেটার।


বয়স বিশ হতে না হতেই মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেলো ‌অন্য শহরে।
তাই চিঠির সংখ্যা আর বাড়েনি।


বয়স বাইশ হতেই মেয়েটি ফিরে এলো
আবারো পুরাতন শহরে-
নিজের বাড়িতে,
হাতে একটি সাদা খাম নিয়ে!!
বেবী হবেনা বলে স্বামী তাকে ডিভোর্সের চিঠি দিয়েছে।
একে আমরা বলি-
ডিভোর্স লেটার।
এটাও রাখলো সেই পুরাতন স্টীলের আলমারীর সিন্দুকে।
সাদা খামটিকে মনে হলো রংধনুর মাঝে জলে ভর্তি সাদা মেঘ।
ভালো মেয়েটির কাছে এখন একশোটি চিঠি।


তারপর একদিন খুব ভোর বেলায় মেয়েটি-
একশোটি চিঠি নিয়ে চারতলা বাড়ীর ছাদে উঠলো।
প্রথমে সব রংগিন চিঠিগুলো সে আকাশে উড়ালো।
আর সাদা চিঠি দিয়ে ডানা বানিয়ে সে ছাদ থেকে লাফ দিলো সাদা কবুতরের মতো উড়ার জন্য।


সেদিন খুব সকালে শহরের সমস্ত মানুষ আশ্চর্য হয়ে দেখলো-
আকাশে এক বিশাল রংধনু ভেসে বেড়াচ্ছে,
আর একটি সাদা কবুতর মনের খুশিতে সেখানে উড়ছে।
ছোট্ট কবুতরের ডানার দাপাদাপিতে হঠাৎ হঠাৎ মেঘ থেকে বৃষ্টি পড়ছে এই অসময়ে।


ভালো মেয়েটি একশোটি চিঠি পেয়েছিলো তার একজীবনে।
———————
রশিদ হারুন
১৭/০১/২০২০