দরজা খুললেই একটা ছায়া দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি আজকাল,
বাড়ির আর অন্য কেউ দেখেনা সেই ছায়া - কেবল আমি ছাড়া।


চুলগুলোতো সাদা রং বাড়ছে,
ভ্রুতেও দু’একটা সাদা ঝিলিক দিয়ে যাচ্ছে কয়েকদিন হলো;
আয়নায় তাকালে আগের মতো আর আলো খেলে না মুখে।
বিশ্বাস করুন,
এই সব ব্যাপারে আমার কোন মনোবেদনা নেই।


আমার মনোবেদনা হয়
ডাকাতিয়া নদীটার জন্য,
সেই নদীর জলে লঞ্চে বসে উদাস হয়ে গাঙচিল উড়ে যেতে দেখি না কতোকাল


ইদানিং কোনো চড়ুই পাখি আমার চায়ের সাথে বিস্কুটের লোভে আর বারান্দার গ্রীলে বসে না,
আমার একটা চড়ুই পাখির জন্য মন খারাপ হয়।


আমার অস্বস্তি লাগে
প্রায়ই প্রতিদিন সকালেই টুথপেস্টের বদলে কিভাবে যেন সেভিং ক্রীম ব্রাশে লাগিয়ে ফেলি,
আর শেভিং ব্রাশে টুথপেস্ট!


বন্ধুদের আড্ডায় যেতেও আলসেমি লাগে!
টিভির রিমোট প্রায়ই হারিয়ে ফেলি,
মোবাইলের রিংয়েও বিরক্তি লাগে।


আজকাল সময় কানামাছি ভোঁভোঁ খেলছে আমার জীবনের সাথে-
সময়কে ঠিকমতো ধরতেও পারলাম না ছুঁতেও পারলাম না একজীবনে।
সময় বারবার পিছলে দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়
আর দরজায় দাঁড় করিয়ে রেখেছে আমার মৃত্যুর ছায়া!


কয়েকদিন আগেও বোকার মতো ভাবতাম
মেরে কেটে হয়তো সেঞ্চুরি মেরে দিবো একটা।
এখন দরজা খুলেই মৃত্যুর ছায়া বিদ্রুপের হাসি হেসে ওঠে,
আমি এখন প্রতিদিন বেঁচে থাকি এই মৃত্যুর ছায়া দেখে দেখে।


পলাতক সময়টাকে যদি একবার ফাঁদে আটকাতে পারতাম,
তাহলে আমার চলে যাওয়া জীবনটাকে সুগন্ধি মেখে
প্রিয় ফুল আঁকা টিনের বাক্সে তালা দিয়ে রাখতাম।
তীব্র মন খারাপের সময়
সেই তালা খুলে চলে যাওয়া জীবনটাকে বুকে মেখে
হাহাকারের শিস বাজিয়ে মনের আকুলতা নিয়ে বলে উঠতাম,
‘ সময়,
ভালোই কাটলো তোমার সাথে,
থেকে যাও আর কয়েকদিন এই বুকে,
দু’জনে মিলে একটা সেঞ্চুরি মেরে দিলে মন্দ হতো না।’
——————-
র শি দ  হা রু ন
০৪/০২/২০২৩