গত পরশু চৌরাস্তার মোড়ে একটি উনিশের যুবক জীবন হারিয়েছে।
সময় ছিলো বিকেল ৫-৩০।
একটু আগে এক পলকা বৃষ্টি হয়েছিলো।
সেই সময় সেখানে একটা রংধনু মুখ গোমড়া করে ঝুলেছিলো।


ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরন—


একটা উনিশের জীবন নিয়ে একজন মুগ্ধ যুবক জটলার মধ্যে দাঁড়িয়ে ক্যানভ্যাসারের ম্যাজিক দেখছিলো।
ঐ সময়ই পাশ দিয়ে চলে গেলো একটি অলস লাল রিকশা-
অলস ষাঁড় মতো ঠিক হেলতে-দুলতে-দুলতে।


রিকশার আরোহী ছিলো হলুদ সালোয়ার পড়া ষোল বয়সের এক কিশোরী।
গোমড়া মুখের রংধনু দেখে সে তার হাসি আর আটকাতে পারেনি।
কিশোরীর হাসি দেখে রংধনুও গোমড়া মুখ রেখে হেসে উঠলো।
তখনই উনিশের সেই যুবকের দুটি চোখই মরলো ষোলোর কিশোরীর লাল ঠোঁটের হাসিতে।


একই সময়ে বুক পকেটে যত্ন করে রাখা- ‘উনিশের যুবক জীবন’ হঠাৎ লাফ দিয়ে কোথায় পড়লো যুবকটি আর খুঁজেই পেলো না ।


ক্যানভ্যাসারের ম্যাজিক শেষে সবাই চলে গেলেও-
যুবকটি ঠায় দাড়িয়ে ছিলো সেখানে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত।
একা, একেবারে একা।
একটা আস্ত জীবন হারিয়েতো আর বাড়ি ফিরে যাওয়া যায়না একা একা।
তারপর রাস্তায় পড়ে থাকা আরেকজনের শত জোড়াতালি মারা একটি জীবন কুড়িয়ে বুক পকেটে ভরলো সে।
খুব ভোর বেলা যুবকটি যখন বাড়ী ফিরলো-
আয়নায় নিজেকে দেখে সে আর চিনতেই পারেনা,
চিৎকার করে ভয় পেয়ে বলেছিলো,
“এটাতো আমি না”।


ধারনা করা হচ্ছে যে-
কিশোরীটি জানতেই পারেনি একজন উনিশের যুবকের জীবন সেই সময় লাফ দিয়ে তার ষোলোর ঠোঁটে গিয়ে পড়েছিলো।


যদি কোন ষোলোর কিশোরী আয়নায় নিজেকে দেখতে গিয়ে,
দু’ঠোঁটের মাঝে উনিশের কোনো যুবকের জীবন ছটফট করতে দেখেন-
তবে দয়া করে নিম্ন ঠিকানায় যোগাযোগ করবেন।
উপযুক্ত পুরষ্কার দেওয়া হবে।
১০৭/এ উত্তর যাত্রাবাড়ী,
নিচ তলা।


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে,
যুবকটি এখন রংধনু রংয়ের পোষাক পড়ে সারাদিনই চৌরাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকে।
আর শত জোড়াতালি মারা জীবন নিয়ে তার একজোড়া মরা চোখে একটি লাল রিকশা খুঁজে, আর খুজে সেই লাল ঠোঁট।
——————————————
রশিদ হারুন
০৯/১২/২০১৯