সারারাত নির্ঘুম থেকে শহরের দেয়ালে দেয়ালে জীবনের বঞ্চনার যে গল্প লিখেছিলাম,
ঘুম থেকে উঠে দেখি সব বঞ্চনার কথা দেয়াল থেকে গুম হয়ে গেছে।    


কবিতার খাতায় একদিন আনমনে এঁকেছিলাম এক পাহাড়,
সকাল হতেই দেখি কবিতার খাতা থেকে সেই পাহাড়ও পালিয়েছে আমাকে না বলেই।


আমার শরীরের আবহাওয়ার কথা জানিয়ে একজন নারী আবহাওয়াবিদকে  
সারা দুপুর ধরে যে চিঠি লিখেছিলাম,
সেটা পকেটে নিয়ে ঘুরেছি অনেকদিন যাবত সারা সকাল বিকেল সন্ধ্যা।
আমাকে দেখলেই সব ডাকবাক্স আজকাল দৌড়ে পালায়,
প্রাপকের ঠিকানায় পোস্ট করা হলো না আজও সেই চিঠি,
এর মাঝে শরীরে গরমকাল চলে গিয়ে শীতের ভাব চলে এসেছে।


আজকাল রাস্তায় নামলেই ভুলে যাই গন্তব্যের ঠিকানা,
প্রায়ই ‌অপরিচিত এক নদীর পারে নিজেকে আবিষ্কার করি।


বৃষ্টির দিন ছাতা নিয়ে বের হলেই ছাতা উড়ে যায় ঘুড়ির মতো ঝড়ো বাতাসে,
ছুটেও আর ধরতে পারি না সেই ছাতা।
সেইসব ছাতা গিয়ে হারায় এক নষ্ট মেয়ের দরজায়,
আর সেই নষ্ট মেয়ের দরজায় কড়া নাড়তেই আমাকে দেখলেই প্রতিবারই বলে,
“ নষ্ট পুরুষ মানুষ এতোটুকুও পছন্দ না আমার!”


আমি সব বঞ্চনা, অবহেলা, শরীরের তাপের কথা ভুলে যাই ‌অনায়াসে
শুধু আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে ফিক্ করে হেসে ফেলি শব্দহীন করে;
কেউ যেন টের না পায়
মনে মনে বলি
-‘বয়স হলে সব পুরুষেরই একদিন এমনই হয় বুঝি।’


শুধু গভীর রাতে আমার কবিতার খাতার পাতা উল্টাতে গেলেই দেখি-
‘মৃত্যু, হাতে সুটকেস নিয়ে সেজেগুজে দাঁড়িয়ে আছে আমার কবিতার প্রতিটি শব্দে।”
——————
র শি দ  হা রু ন
০৭/০৭/২০২২