আলমারীতে এতো কাপড়,
অনেক’গুলো কখনোই পরা হয়নি ,
বুকের ভিতরে লোভের কোনো জল ঝরে না এতো কাপড় দেখেও,
আমার জল ঝরে শুধু চোখ থেকে,
বাবা,
আমার বোধহয় চোখের ডাক্তার দেখাতে হবে!


এতো কাপড় দেখলেই শুধু তোমার কথা কেনো মনে পড়ে বাবা?
আমাদের চার ভাই-বোনের
সংসারে বছর দু’বছরে একটা নতুন কাপড় জুটতনা,
তোমার বোধহয় বুকের অক্ষমতার অনেক জল ঝরেছে গোপনে,


আজ আমার চোখের জল ঝরে
তোমার কষ্টে,
বাবা,
আমার বোধহয় চোখের ডাক্তার দেখাতে হবে।


কতো খাবার টেবিলে থাকে,
তবুও মুখের জল ঝরে না,
আমার জল ঝরে শুধু চোখ থেকে,
মা,
আমার বোধহয় চোখের ডাক্তার দেখাতে হবে!


ঠিকমতো খেতে দিতে পারতে না বলে,
তুমি কতো যে কেঁদেছো,
তোমার চোখের জল কতো যে মিশেছে
আমাদের খাবারের সাথে,
তোমার চোখের জলও আমরা খেয়েছি তৃপ্তি সহ,
আজ আমার চোখের জল ঝরে
তোমার চোখের জলের কষ্টে,
‘মা’
আমার বোধহয় চোখের ডাক্তার দেখাতে হবে!


এতো বড় বাড়ী দেখে তবুও ছোট্ট মনে হয়,
তোমরা যখন ছিলে
ছোট ঘরটি কতো বড় মনে হতো।


তোমরা নেই ,
তাই এমন মনে হয়,
‘বাবা-মা,’
আমার বোধহয় মনের ডাক্তার দেখাতে হবে!


আমরা যে টিনের ঘরে থাকতাম,
সেখানে এখন ছ’তলা বাড়ী,
সেই ঘরটি আমায় স্বপ্নে দেখা দেয়,
কথা বলে,
“এভাবে একা কেঁদো না,
তাহলে মরে যাবে একদিন আমারই মতো,
একদিন সবাই অনেক কিছুই ফিরে পায়,
শুধু সময়টুকু ছাড়া,”
ঘর’টির জন্য আমার বুকেও জল ঝরে।


বাবা- মা,
আমার বোধহয় বুকের ডাক্তার দেখাতে
হবে
——————————-
রশিদ হারুন
২২/০৩/২০১৯
শাহজালাল আভ্যন্তরীন বিমান বন্দর
দুপুর-১২.১২