চিৎকার করে ডেকে যাই শুধুশুধু
কেউই সাড়া দেয় না,
এত  রাত করে একজনও বসে নেই আমার জন্য।
পুরো শহর এখন ঘুমিয়ে
অথবা ঘুমের মুখোশ পরে শুয়ে আছে।


তবুও আমি ডেকে যাই
‘মনোলীনা,
দরজাটা খোলো,
প্লীজ দরজাটা খোলো।'


হঠাৎ আকাশে বিষাদের আলোর ঝলকানি দিয়েই আত্মাহুতি দেয় এক অভিমানী উল্কা।
আর ঘুমের মুখোশ খুলে ঠিক তখনই ভেসে আসে মানুষের ভালোবাসার হাসাহাসি,
আর দরজা খোলার অপেক্ষায় অপেক্ষায়
মেয়াদোত্তীর্ণ হতে থাকে
তোমার আমার ভালোবাসাবাসি।


‘মনোলীনা,
দরজাটা খোলো,
প্লিজ দরজাটা খোলো।'
আমাদের বুকে ভালোবাসা আছে কি এখনো?
নাকি বুকে বয়ে চলছে শুধু শরীরের অভ্যেসের দাবিদাওয়ার জোর আবদার।


বহুদিন ধরে অপমান আর অভিমানের আগুনে পুড়ে
তোমার আমার পাওয়া না পাওয়ার হিসাবের খাতা,
প্রতিদিনই  চাল ডাল আর নুনের দামের বড় হওয়ার স্পর্ধায়
আমার সক্ষমতা ছোটো হতে হতে প্রতিদিনই  মরে বারবার
আমারই প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগের গভীর অন্ধকারে।
তবুও প্রায়ই রাত গভীর হলে
দাবিদাওয়া, অপমান আর অভিমানের দেওয়াল টপকে
চাল ডাল আর নুনের দামের  হুঙ্কারকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে
আমি তোমার দরজায় এসে দাঁড়াই-
ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি সারারাত
অপেক্ষায় অপেক্ষায় দুঃখ শিকড় গেড়ে বসে বুকে,
তবুও দরজা খোল না তুমি!
‘মনোলীনা,
দরজাটা খোলো,
প্লীজ দরজাটা খোলো।'


অভিমানী উল্কার আত্মহুতিতে হঠাৎ হঠাৎ চোখ চলে যায় রাতের আকাশে,
নিঃসঙ্গ চাঁদের আলোতে আমার সব দুঃখই একসময় মিথ্যা মনে হয়।
তখন বাতাসে কান পাতলেই শুনতে পাই
রাতের মানুষের ভালোবাসার ফিসফিসানি আর হাসাহাসি,
সাথে কিছু শব্দ
‘লাইফ ইজ ভেরী বিউটিফুল”।


আমিও সেইসময় আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে খাঁটি ভালোবাসায় বুকের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বলি-
‘মনোলীনা,
লাইফ ইজ ভেরী বিউটিফুল,
দরজাটা খোলো
প্লীজ, দরজাটা একবার খোলো’।


——————
র শি দ হা রু ন
০৪/০৯/২০২৩
মন্ট্রিয়াল, কানাডা