মহল্লার মসজিদের ঠিক পেছনে কবরস্থানের পাশে যে মানুষটা দিনরাত বসে থাকে
তাকে দেখলেই আমার গা ছমছম করে ওঠে!
একদিন হঠাৎ করেই খুব ভোরবেলা মহল্লার মানুষজন তাকে আবিষ্কার করেন।
মানুষটা সেই সময় কবরস্থানের ভিতরে চুপচাপ বসে ছিলো।


মহল্লার সবার কাছেই মানুষটা ‌অপরিচিত!
কোথা থেকে  যে এসেছে কেউই জানে না!
মানুষটা মাঝে মাঝে পাগলের মতো আচরণ করে।


প্রায়ই রাতের বেলা এক একটা  কবরের পাশে বসে তাকে কাঁদতে দেখা যায়,
কখনো গল্প করতে শোনা যায়
অথবা, হাসতে হাসতে কোনো কবরের উপর আছড়ে পড়তে দেখা যায় বারবার।


নামাজের সময় ইদানিং আমি অস্বস্তি নিয়ে মসজিদে যাই,
মানুষটার সাথে দেখা হলেই
আমার কেন যে মনে হয়
আমি আয়না দেখছি!
আমিও ভিতরে ভিতরে হয়তো ওর মতোই পাগল
অথচ সুস্থ মানুষের মুখোশ পরে ঘুরে বেড়াই।
ওর সামনে আসলেই যেন নিজের মুখোমুখি হয়ে যাই প্রতিবার।


বুকে সৎ সাহস নেই আমার,
তাইতো লজ্জার মাথা খেয়ে বেহায়ার মতো নিজের কাছ থেকে নিজেকে লুকাই।


আমাকে দেখলেই মানুষটা মৃদু হেসে ওঠে প্রতিবার
অথচ আমি সংকোচে পালিয়ে বাঁচি।


পালাতে পালাতে একদিন নিজের মুখোমুখি হয়ে পড়ি,
তার হাসির জবাবে প্রচণ্ড সাহস করে আচমকা তার পাশেই বসে পড়ি একদিন!
আর আমি নিজেই লোকটার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকি।


সাথে সাথে কবরস্থানের দিকে তাকিয়ে দেখি
প্রতিটি কবরের উপর
পরিচিত-‌অপরিচিত মানুষজন বসে আছেন;
উনারাও আমাদের সাথেই হাসছেন।


এখন আমিও প্রায়সময়ই লোকটার সাথে কবরস্থানে বসে থাকি।
সে কাঁদলে আমি কাঁদি,
সে হাসলে আমিও হাসি:
আর হঠাৎ হঠাৎ পরস্পরের দিকে দীর্ঘক্ষণ শুধু তাকিয়ে থাকি!
অথচ আমাদের মাঝে কখনোই কোনো কথাই হয়না।


মহল্লার সবাই এখন আমাদের দু’জনকে দেখলে দূর দিয়ে হেঁটে যায়!
আমাদের দেখলে হয়তো তাদের সবারই গা ছমছম করে ওঠে।
——————
র শি দ। হা রু ন
০৪/০২/২০২২