একটি ‌অদৃশ্য ভগ্নস্তুপে দীর্ঘকাল দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে,
একটি কথা বুকে পেরেকের মতো গেঁথে গেছে--
-“আমার, তোমাকে এখন ভীষণ দরকার।”


'দরকার' এমন একটি শব্দ যা স্থান কাল ভেদে বদলে যায়।
বাজার করতে গেলেই অল্পবয়স্ক মাছওয়ালারা আমাকে কীভাবে যেনো পঁচা মাছ গছিয়ে দেয় সব সময়।
অথচ বাবার পরিচিত মাছওয়ালারা থাকলে ডেকে টাটকা মাছ দিয়ে দামও কম রাখেন।
তারা প্রায়ই বলেন,
" আপনার আব্বা খুব ভালো মানুষ ছিলেন।”


'দরকার' শব্দটি আমার কাছে এখন বিশাল প্রার্থনা।
সামান্য মাছের বাজারেও এর অভাব আমাকে
সৃষ্টিকর্তার কথা স্মরণ করিয়ে
-পুরোপুরি আস্তিক বানিয়ে দেয়।


যখনই খুব শক্ত একটা হাতের অভাব বোধ হয়
-ঠিক তখনই 'দরকার' শব্দটি একটা বিশাল শূন্যতা, হাহাকার আর দীর্ঘশ্বাসের হাওরে ডুবে আর ভাসে।
এই 'দরকার' শব্দটি পনেরো বছর যাবত শুধু
-ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের মতো বুকে গুতো মারে সময় অসময়।


এই ব্যস্ত শহরে হঠাৎ হঠাৎ দীর্ঘশ্বাসের যে
গরম বাতাস টের পাওয়া যায়,
সেখানে প্রায়ই ছেড়া ঘুড়ির মতো বাতাসে  একটি চিঠি উড়তে থাকে-
যেখানে লেখা থাকে, “ বাবা, তোমাকে আমার এখন ভীষণ দরকার।”


আর আমি মন খারাপ করে পনেরো বছর যাবত  সে‌ই সময় দীর্ঘশ্বাসের গরম বাতাসে পুড়তে পুড়তে খোদার কাছে প্রার্থনা করি
- ‘যেখানেই রাখো, আমার বাবা যেনো খুশি থাকেন’।
——————————
রশিদ হারুন
১৫/০৫/২০২০