দুপুরের শরীর পোড়া রোদে হাঁটতে হাঁটতে
ঘরে ফিরছিলো এক সদ্য কিশোর বালক।
নিজের বাড়ির গলিতে ডুকতে গিয়ে
হঠাৎ করেই আকাশের দিকে সে তাকালো,
ঠিক তখনই তিনটি দৃশ্য তার বুকে একসাথে ঢুকে গেলো।


একটি সুতোকাটা ঘুড়ি বৈদ্যুতিক তারে আটকে
বাতাসের সাথে তীব্র  লড়াই করছে মুক্তির জন্য।
ঠিক পাশেই সেই বৈদ্যুতিক তারে পুড়ে
একটি মৃত কাক উল্টো হয়ে ঝুলছে।
আর সেই মৃত কাক বরাবর বাড়িটির দোতালার বারান্দায়
একজন সদ্য কিশোরী বালিকা  আশেপাশের সব কিছু ভুলে গিয়ে
-গোঙানির মতো শব্দ করে কাঁদছে।


তাকে দেখলে বালিকাটি লজ্জা পাবে ভেবে
সে তখনই সেখান থেকে বাড়িতে চলে এসেছিলো।
তারপর থেকে সারাদিন সারারাত বালকটির বুক থেকে মাথায়
বায়োস্কপের মতন দৃশ্য তিনটি শুধু ভেসে বেড়াচ্ছো,
তাকে একটুও বিশ্রাম দিচ্ছে না দৃশ্য তিনটি।


বালকটি তার এ‌ই ছোট্ট জীবনে হঠাৎ করেই
একেবারে অপরিচিত হাহাকারের যন্ত্রনায়
অঘুমে পার করলো পুরো রাত।


পরদিন বালকটি খুব ভোর বেলায় এসে দাঁড়ালো গলির ঠিক সেখানেই।
দেখলো মৃত কাকটি মাটিতে পড়ে আছে,
ঘুড়িটির সুতো আর কিছু ছেড়া কাগজ ঝুলছে বৈদুতিক তারে;
আর দোতালার বারান্দায় চোখের জল ফেলা
সেই কিশোরী বালিকাটি আর নেই।


তখনই এক সময় বালকটির চোখের সামনেই
মৃত কাকটিকে নিয়ে দৌড়ে পালালো রাস্তার একটি কুকুর।
হঠাৎ অসময়ের বৃষ্টিতে ঘুড়িটির সুতো ছাড়া সব কিছু ভেসে গেলো মূহুর্তেই,
তবুও দোতালার বারান্দায় সেই মেয়েটির আর দেখা নেই।
বালকটি শুধু অসময়ের বৃষ্টিতে শরীরের ভিতরে বাহিরে ভিজে একাকার।
সেদিন থেকে‌ই বালকটি এক অচেনা কষ্টে ‌অঘুমে দীর্ঘ সারারাত পার করে।


সেই দৃশ্য তিনটি আর কখনোই এক হবেনা,
বালকটি জানে, তবুও বুঝতেও চায়না।
তবুও বালকটি প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে
আকুল এক গোপন প্রার্থনায়,
ঈশ্বর যদি কোনদিন হঠাৎ করেই দৃশ্য তিনটি আবার একই সাথে ঘটাত।


সে তখন শুধু জানতে চা‌ইবে মেয়েটির কাছে
- মেয়েটি কিসের দুঃখে এভাবে কাঁদছে!


আহারে,
কতো কষ্ট পেলে মানুষ এভাবে কাঁদে!
আহারে,
কতো কষ্টে মানুষ এভাবে কাঁদে!
————————————
র শি দ  হা রু ন
১৬/১০/২০২০