শহরের সমস্ত দেওয়াল জুড়ে অসংখ্য ‍অদৃশ্য ছবি,
সবই বিভিন্ন বয়সের মানুষের ছবি।
এই সব ছবি সবাই দেখতে পায়না,
শুধু এইসব ছবির মানুষের আপনজনেরাই দেখতে পায়।


একটি গোপনসূত্র হতে খবর পাওয়া গেছে
-এতোদিন এই সকল ছবি সারা দেশের আনাচে কানাচের কিছু মানুষের ঘরের ভিতরে দেওয়ালে ছবির ফ্রেমে বাঁধানো ছিলো,
হঠাৎ করেই সেই ফ্রেমগুলো থেকে এগুলো অদৃশ্য হতে থাকে
আর লুকিয়ে লুকিয়ে সব শহরের দেওয়ালে দেওয়ালে আশ্রয় নিয়েছে।
সেই সুত্রই বলেছে যে
-আরো অসংখ্য ছবি এখনও শহরের দেওয়ালের দিকে অগ্রসর হচ্ছে,
আর ছবি খুঁজতে এগিয়ে আসছে তাদেরই সব আপনজন।


যতই দিন যাচ্ছে ছবিগুলো দৃশ্যমান হয়ে উঠছে ক্রমশ,
দেওয়ালে ভেসে উঠা সমস্ত ছবিগুলোর নিচে তাদের আপনজনেরাই হেলান দিয়ে বসে আছে বুক আর মুখ সেলাই করে।
তারা শুধু ফ্যালফ্যাল করে সারাক্ষণ চেয়ে থাকে সেই ছবিগুলোর দিকে।


ছবিগুলোর নিচে লাল রক্তে নানান লেখা ভেসে উঠলো একদিন
-আমার কি দোষ ছিলো,
তিনটা বুলেট মাথায় ঢুকিয়ে দিলেন হাত-পা বেঁধে
এর নাম বুঝি গোলাগুলিবিনিময়,
আমিতো বিনিময়ে আপনাকে কিছুই দেইনি?


-আপনি রাতে ঘুমানতো,
আপনার মুখে তো আমার বুকের তাজা গরম রক্ত লেগেছিল।
আমার স্পষ্ট মনে আছে,
আপনি জিভ দিয়ে সেই রক্ত চেটে খেয়েছিলেন!


-আমিতো গুম হইনি, আমাকে মেরে কবেই নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুধু শুধু আমার বাবা-মাকে অপেক্ষায় রাখছেন কেনো?


এ রকম আরো অসংখ্য লাল স্লোগান দিন দিন শহরের সব দেওয়ালে ভেসে উঠছে প্রতিটি ছবির ফ্রেমের মতো করে।


একদিন হঠাৎ করেই সব দেওয়াল থেকে আবারও ছবিগুলো অদৃশ্য হয়ে গেলো,
সমস্ত লেখাগুলো মুছে গিয়ে শুধু সারা শহরের দেওয়ালে দেওয়ালে লাল কালিতে রইলো একটি শব্দ “প্রতিশোধ”।


এই সব ছবিগুলো প্রতিশোধ নিতে বেড়িয়ে পড়েছে,
রাতের নির্জনতা ভেঙে প্রায়ই অদৃশ্য কন্ঠে সারা শহর কাঁপিয়ে স্লোগান উঠে
“আমাদের রক্ত ফিরিয়ে দাও আমাদের শরীরে।”
———————
র শি দ  হা রু ন
২৪/০৯/২০২০