আজকাল সারারাত
বারান্দার এক কোনে বসে বসে আকাশ দেখি।
আর অযথাই সিগারেটের ধোঁয়ায় আকাশে মেঘ বাড়াই।
অন্ধ বাদুরে কামড়ানো একটা চাঁদ আর তার  নখের আঁচড়ে আহত আমার মন  কানামাছি খেলে সেই মেঘে।
আমাদের ঘুম বিছানার ডানদিকে ঠিক তোমারই ঘুমোবার জায়গায়-
একটা কালো কলম সারারাত অপেক্ষা করে আমার জন্য।
যেখানে শুয়ে তুমি আমার শরীরকে পুড়িয়েছো বহুবার।
এখন তাই প্রতি রাতে ,
অচেনা এক মনস্তাপে,
লুকিয়ে থাকি বারান্দার এক কোনে -
কালো কলমটার কাছ থেকে হাজার মাইল দুরে।
দিনের বেলায় কলমটি তুলে করে রাখি তোমার আলমারীতে,
ভুল করে রেখে যাওয়া তোমার পুরোনো শাড়ী, ব্রা আর প্যান্টির ভাঁজে ।
বিলাপ করতে করতে কলমটি সারাদিন
তোমার শরীরের গন্ধ মাখে তাদের কাছ থেকে।
শুধু রাতে ঘুমোতে গেলে দেখি কলমটি শু্য়ে আছে-
বিছানার  ডানদিকে তোমারই শোবার জায়গায়।


তখনই আমি  রাতের বারান্দা্য় চলে যাই-
বিষণ্ণ চড়ুই পাখির মতো অক্ষম ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে।
সারারাত বারান্দায় বসে বসে কিছু অসমাপ্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলি,
আর প্রশ্বাসে অপেক্ষা করি তোমার শরীরের ঘ্রানের জন্য।


যেদিন সিগারেটের ধোঁয়ার গন্ধ ম্লান করে-
আমার প্রশ্বাসে ভেসে আসে কলমের দীর্ঘশ্বাসের হাহাকার,
সেদিনই  তোমার শরীরের সেই আদিম গন্ধ
টের পাই আমার ঘুমন্ত শরীরে।
জেগে উঠে শরীর আদিম যুগের শিকারীর মতো,
অন্ধ বাদুরটাকে হত্যায় লেগে যাই তখন।


সারারাত ধরে এক কবিতা লিখি
বিছানার প্রতি ইঞ্চি জুড়ে
এক লাইনের একটি কবিতা-
“তুমি ছাড়া আমি এখন বিষণ্ণ এক চড়ুই।”


তুমি চলে গেলে আমার কিচ্ছু আসে যায়না,
তাই বুকে প্রচন্ড জেদ করে-
মাথার ভিতর আগুন ধরিয়ে বলতে পারি,
-“তোমাকে ছাড়াই আমার জেদী বুকে এখন কবিতা ধরা দেয়,
-শুধু একটি কালো কলমের বুকের দীর্ঘশ্বাসে-তোমার শরীরের ঘ্রান হলেই,
আমি এখন কবি হয়ে যাই,
বুঝলে- ভয়ংকর জেদী কবি।
———————————
রশিদ হারুন
২৪/০১/২০২০