তোমাকেই বলছি,
তোমাদের নতুন দোতলা বাসায় কেমন লাগছে?
দখিণের বাতাস কি তোমার শরীরে মাখে?
দুপুরে য়খন তোমার ভাতঘুমের ইচ্ছে জাগে,
বেয়াড়া সূর্যটা ঘরে উকি দেয়নাতো অযথাই?
দিলে আমাকে বলবে,
সূর্যের চোখ বেঁধে রাখবো কালো কাপড়ে
যখনই তুমি ঘুমোবে।


বারান্দায় কি একটি চড়ুই বসে?
বিষণ্ন এক চড়ুই,
তার পাখায় লেগে থাকে আমার সকল পার্থিব  ক্ষুধা,
আমার দীর্ঘশ্বাসের ক্ষুধা,
আমার অক্ষমতার ক্ষুধা,
আমার শরীরের ক্ষুধা,
আমাকেই খুঁজে পাবার ক্ষুধা।
তুমি ডাকলেই কিন্তু তোমার শরীরে গিয়ে বসবে।
সাবধান, চড়ুইয়ের ডানা থেকে এই ক্ষুধা
তোমার শরীরেও লেগে যেতে পারে!
বেশি আস্কারা দিয়োনা,
থাক;
ডাকার দরকার নেই।


রাতের ভাঙা চাঁদ কি দেখা যায় বিছানায় শুয়ে তোমার জানালা দিয়ে?
কষ্ট করে জানালার পর্দা সরিয়ে সে সময় তাকালেই দেখবে,-
ভাঙা চাঁদের আলোয় কিছু
‘ভুল জোনাকি’ আত্মহননে মেতেছে আমার যৌবনের বিবশ যন্ত্রনায়।
তুমি কষ্ট পেয়ো না।
জানালার পর্দা টেনে দিয়ে
‘ঘুম বিছানায়’ ঘুমিয়ে যেও।
বিছানার ডান পাশে আমাকে কিন্তু খুঁজোনা,
ভুলেও খুঁজবে না।
ফাঁকা বিছানা খুব কষ্টের;
জীবন্ত যৌবন সেখানে বিলাপ করে।


‘ঘুম বিছানার’ ডান পাশ খালিই থাকবে,
আমি কোনদিন আসবোনা,
           কোনদিন আসবোনা,
                                      আসবোনা,
                                                     না।


তুমি মাঝ রাতে জানলা খুলে
দোতলা থেকে ল্যাম্পপোস্টের দিকে তাকিয়ে দেখো,
একটা মানুষ তার বিষণ্ন ছায়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
একটি ডাকের আশায়,
                       ডাকের  আশায়,
                                        আশায়।
তুমি না ডাকলে,
আমি আসবো!
-এতো বেহায়া এখনো হয়ে যাইনি,
বলে দিলাম,
আবারো বলে দিলাম।


অহং ছেড়ে একবার ডাকো,
দয়া করে ডাকো,
ডাকতে কষ্ট হলে হাতের ইশারা দাও,
তাতেও যদি কষ্ট হয়
তবে দরজাটা খুলে দাও,
আমার বিষণ্ন ছায়া আমাকে জোর করে তোমার দরজায় এনে দাঁড় করিয়েছে,
একটু সরে দাড়াও,
আমাকে ঘরে ঢুকতে দাও।
—————
রশিদ হারুন
২৮/০২/২০১৯
বই মলা-২০১৯
সোরোয়ারর্দী উদ্যান,ঢাকা