মাহো ছিল একটি গ্রামের নাম,
সবুজ গাছের আনকোরা পাতা ছিল তার শাড়ি
সোনালি ধান ছিল তার আঁচলের চুমকি
আষাঢ়ের প্রথম কাজলপাতি মেঘের মত ছিল তার চুল
জুঁই,কুন্দ,বকুল ফুলের মালা গলায় পরে
নদীর জলে পা ডুবিয়ে বসে থাকত সে ওপারে মঙ্গলের দিকে চেয়ে,
মঙ্গল ছিল নদীর ওপারের আর একটি গ্রাম-
যার বুক জুড়ে ছিল এক কালো পাহাড়,
যেন কোন আদিবাসী যুবক বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার সঙ্গিনীর জন্য।
দক্ষিণের হাওয়া বইলে মাহো পেত মঙ্গলের নেশা নেশা ঘামের গন্ধ;
উত্তুরে হাওয়ায় মঙ্গল পেত সুন্দরী মাহোর স্নিগ্ধ আবেশ!
কোনদিন কাছে পাবে না জেনেও একে অপরকে ভা্লোবাসত কত যুগ!
দুজনের ভালোবাসায় কুটিলা নদীর হিংসা হত খুব,
একদিন তার বন্ধু ঝড় ও তার মা বৃষ্টিকে নিয়ে করল এক গভীর ষড়যন্ত্রঃ
শ্রাবণের এক অন্ধকার রাতে তিনজনে মিলে ভাসিয়ে দিল মাহোকে-
কোথাও একটুও কোন চিহ্ন থাকল না তার!
পরদিন সকাল হলে ঘুম ভাঙতে মঙ্গল চেয়ে দেখে,
মাহো কোথাও নেই-চারিদিক শুধু লাল জল আর বেদনার লাখো ঘূর্ণি;
মঙ্গল চিৎকার করে উঠল- মাহো, মাহো তুমি কোথায়..........
পাথরের কান্নাতো শুনতে পায়না কেউ,
শুধু নদীর নিষ্ঠুর খিলখিল হাসি শুনতে পেল সবাই!