দুঃখগুলো আজকে ভীষণ কাঁটার মতো বিঁধছে,
অন্ধকারেও মনটা আমার রঙিন ছবি আঁকছে,
ভুলেই ছিলাম বেশ বহুকাল, ক্যানভাসটা খালি টানছে,
রঙের খেলা সাঙ্গ করেছি সেই কবে, তবু কালোটা কেবল হাঁকছে,
নিত্য খালি রাতটা আমার তমসা দিয়েই ঢাকছে,
চাঁদ দেখিনি কতটা কাল সে কি ওরা বুঝবে?
ওরা শুধু ফন্দি আঁটে ছবির সেটেই গুঁজবে,
আমি ত আর রঙ ঘাটি না, কেমনে ছবি আঁকবো, তবে
সেই কবে, এঁকেছিলাম, জল রঙে একখানা ছবি।
রঙগুলো মোর সঙ্গী ছিল, ইশারাতেই নাচতো,
এদিক সেদিক নেচে গেয়ে মনের ছবি আঁকতো,
ছবি ত নয় একেবারে জীবন্ত!
কেমন তাকিয়ে থাকে দেখ, মা বলেছিল।
ছবির ও আবার জীবন হয় নাকি!
এই ত কালই স্টোর রুমে ধুলো মাখা দেখলাম,
ময়লা শীটগুলো জীর্ণ হয়ে পড়েছে,
মা যদি দেখতেন, নিশ্চয় পূর্বের কথা ফিরিয়ে নিতেন।
সময়ের সাথে অনেক কিছুই তো জীর্ণ হয়ে পড়ে,
তাই বলে অমনি ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে, গুমোট স্টোর রুমে?
হয়ত এমনি করেই সবকিছু ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়।
ওরাও যদি মানুষের মতো, তবে অমন দশা হত না আজ,
মায়ের কথা যদি আসলেই সত্যি হত, যদি ওরাও জীবন্ত হত,
মানুষের মত লুকিয়ে রাখতে পারতো, বেশ অভিনয় করত।
কিছু জিনিস বোধহয় লুকিয়ে রাখাই ভালো,
নইলে আজ এমনটা ওর হত?
তবে এককালে বেশ প্রশংসা কুড়োতো,
করিম চাচা তো নিত্যই বলতেন, বেশ খাসা বানিয়েছো বাছা,
বৈঠকখানার বিশেষ স্থানটিতেও খানিক কাল ঠাঁই পেয়েছিল,
বাবা বলতেন, এককালে দেখিস, ছবি খানা আমাদের জন্য গৌরব বয়ে আনবে,
দাদিমা আমার মোটা ফ্রেমের চশমা উঁচিয়ে বলতেন,
ছবিখানার মধ্যে আশ্চর্য কিছু একটা আছে দাদুভাই,
তোর দাদা যদি একটিবার দেখতে পেত রে,
দাদিমা আর নেই, ছবি খানার পাশে ঘুরঘুর করত বিড়ালছানাটিও আর নেই,
অমাবস্যার অন্ধকারে এককোণে পড়ে রয়েছি,
আমি আর আমার ছবির সেট।