( ঐতিহাসিক ৭-ই মার্চ আমি দেখিনি, সম্পূর্ণ কল্পনা থেকে কবিতাটি লিখার চেষ্টা )


মধুর কণ্ঠে, শ্রেষ্ঠ মুক্তির গান শোনানো হবে আজ
পাপড়ি হীন ঝরা ফুল, হবে বিগত
মুক্ত নতুন কলি ফুটবে গাছে গাছে,
পরাধীনতার শৃঙ্খলের হবে অবসান ।


তিমির বিনাশী, আলোর সারথি
ভুবন ভাসানো একরাশ আলো নিয়ে –
নব দিগন্তে উঠবে, স্বাধীনতার কোমল রবি,
শান্তির পায়রা ডানা মেলে –
উড়ে যাবে, মুক্ত আকাশ পানে ।


বাংলার মহান শিল্পী !
অমর কণ্ঠে শোনাবে -
বাঙালির শ্রেষ্ঠ মুক্তির গান খানি
ছিলনা ঢাক-ঢোল,
ছিলনা বাদ্য-বাজনা......
ছিল শুধুই, মুক্তিকামী লাখো শ্রোতার কলরব ।


ফসলের মাঠে কাজ ফেলে দলবেঁধে
লাঙল-জোয়াল কাঁধে -
ছুটে এসেছিল, অবহেলিত কৃষক ।
মুক্তির তৃপ্ত বাসনা নিয়ে কারখানা থেকে-
দলেদলে এসেছিল, ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত খেটে খাওয়া দিন মজুর
লাঠিতে ভর করে কুঁজো বুড়ো-বুড়ি,
শিশু কোলে মমতাময়ী 'মা' ।


স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
ছুটে এসেছিল, ছাত্র-ছাত্রী'র দল,
মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে,
মিশেছিল, এসে রেসকোর্স ময়দানে ।
দিগন্ত প্লাবিত একখণ্ড, আকাশ
মিশেছিল প্রাণ প্রিয়, ধু ধু মাঠের সবুজে ।


উত্তেজিত ব্যাকুল বিদ্রোহী লাখো শ্রোতার অপেক্ষার প্রহর
কখন আসবে? বাঙালির ভালবাসার অমর কণ্ঠি শিল্পী
শোনাবে কাঙ্ক্ষিত বাংলার মুক্তির অমর গাথা খানি,
সময়ের স্রোতে বয়ে চলেছে -
প্রতিক্ষার প্রহর !
ঘণ্টা.... মিনিট.... সেকেন্ড......!


পদ্মা, মেঘনা, যমুনার উত্তাল স্রোতে
রেসকোর্সের জনসমুদ্রের জোয়ারে ভেসে,
অবশেষ! দু'হাত উঁচু করে
জনতার মঞ্চ কাঁপিয়ে –
উপস্থিত হলেন, চিরঞ্জীবী শ্রেষ্ঠ বঙ্গ শিল্পী,
যুগল চোখে, কালো ফ্রেমের চশমা
গায়ে, বাঙালির ভালবাসার শ্রেষ্ঠ কালো কোট ।


সূর্যের উত্তাপে উত্তপ্ত হয়ে...
পরাধীনতার, বিরুদ্ধে হৃদয়ে মুক্তির স্বপ্ন এঁকে –
অতঃপর ! তর্জনী নাড়িয়ে,
বজ্রকন্ঠে, নজরুলের বিদ্রোহী সুরে...
শোনালেন, " মুক্তির " অমর গাথা খানি -
"এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম"
"এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম " ।।


চির চেনা সেই বজ্রকন্ঠস্বর
ভেসে গিয়েছিল, পূর্ব থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে
বজ্রের অগ্নি শিখায় দগ্ধ করেছিল –
নরঘাতক ইয়াহিয়ার পাঁজর ।


দগ্ধ পাঁজর ভেদ করে -
"মুক্তি"- নামের মহান শব্দটি হৃদয়ে গেঁথে ছিলো –
বাঙালী চিরতরে ।।


রচনাকাল : ২০২১ ইং