আমি আমার বিধ্বস্ত পথ ধরে হাঁটছি
আমি আমাকে চেনার চেস্টা করছি,
সেই আমাকে পূর্বের আমাকে
যখন আমি এই বিধ্বস্ত ধূলোপথে
অমলিন হাসি হেসে ধূলো
মাখিয়েছি
যেই পথের সাথে দিনে সহস্রবার
দেখা হত
যেই পথই ছিল আমার আত্নার আত্না
সেই পথ আজ আমার কাছে হায় অচেনা
কোনো সত্ত্বা।
তাহলে আমি কি সেই আমি আছি?
নাহ!আমি নেই থাকার প্রশ্নও আসেনা
কারণ আমি আজ অহংকারী
আমি আজ স্বার্থপর,লোভী।
শহরের কংক্রিট ভিতগুলো আমার হৃদয়ে
আসন গেড়েছে।
উঁচু ছাদগুলো হাতছানি দিয়েছে
আমাকে,
রংচঙা দালানের ভিড়ে
ছোটবেলার প্রহরগুলো
নিতান্তই অবহেলায় ভেসে গেছে
অন্তহীন পথে।
তা না হলে আমি এভাবে ভুলে
যেতাম না।
এভাবে আমার রক্তের বাঁধন ছিঁড়তে
পারতাম না
আমার জন্মশিকড় এভাবে ভুলতে
পারতাম না
আমার হৃদপিন্ড আজ শুধু শহরের কথা
বোঝে,
চোখে ভাসে শুধু মাল্টিস্টোরড স্তর
আর স্তর।
আমি আজ অনেক উপরে উঠেছি
হাইস্ট্যাটাস এতোটাই পাগল করেছে
যে
আমার জন্মশিকড়কেই অস্বীকার করছি।
হয়ত সময়ঘড়ি সেই সুযোগ বয়ে এনেছে
কিংবা হাইস্ট্যাটাস মনের গহীনে
দিয়েছে অহংকারের আত্নপ্রকাশ।
তাইতো আমি আজ মাটির সকাশে
কোনো আগ্রহ দেখাইনা।
আমার জন্ম শিকড়কে ভুলে গেছি।
যাকগে দেড় যুগ পরে হাঁটছি আমার
বিধ্বস্ত গাঁয়ের পথে,
আমি আমার বিধ্বস্ত পথের কথাই বলি-
যেই পথের প্রতিটি ধূলিকণা আমাকে
চিনতো,
সারাটা দিবাপ্রহর ধূলি মাখিয়েছি
গায়ে
একমুঠো ক্ষণেক্ষণে উড়িয়েছি
রোদের উঠোনে
শুণ্য বাতাসে,পুর্ণ হরষে।
কিন্তু ধূলিগুলো আজ বড়ই অচেনা,
আজ বড়ই বেমানান আমার হৃদয়ে।
পদচিহ্নে পুরোনো স্মৃতিগুলো আমার
মনের ক্যানভাসে নাড়া দিচ্ছে,
সেই ছোটবেলার উত্তপ্ত স্মৃতিগুলো,
যেগুলি ছিল সরল আদর আর মায়ায় ভরা
ফোঁকলা দাঁতের অমলিন হাসি আর
হুল্লোরে ভরা
সেই স্মৃতিগুলো সেই নিরেট,খাঁটি
সত্য স্মৃতি।
আজ আমি অহংকারী,লোভী এসেছি
গাঁয়ে
এতোকাল পরে হাঁটছি বিধ্বস্ত পথে
এই হাঁটাটা ফরম্যালিটি ছাড়া কিছুই
নয়,
কারণ শহরের নিষ্ঠুর পথঘাট আমাকে
রুদ্ধ করে আমার সেই বিধ্বস্ত পথের
স্মৃতিকে ভুলিয়ে রেখেছে।