আমার স্বপ্নগুলো সাদাকালো রঙিনের বড়ই অভাব
স্বপ্নে আমি চোখে দেখি ফুটপাতে একটি ছেলেকে
যে ছেলেটি রয়েছে দাঁড়িয়ে স্থবির হয়ে
একটি পা বিহীন ভাঙা হৃদয় নিয়ে।
ফ্যাকাশে মলিন মুখে থাকে তাকিয়ে
মেঘযুক্ত কিছুটা নীল আকাশে।
তার চোখে নেই হাসির উন্মাদনা
আছে শুধু হতাশার গভীর জলকণা।
আমি তাকে স্বপ্নে দেখি মধ্যরাতে
ফুটপাতে ছেঁড়া কাঁথা দিয়ে তার দেহ ঢাকা
অভুক্ত হয়ে পড়ে আছে নিয়মিত অবহেলায়
রোডের নিয়ন আলোয় তার কংকাল দেহ জেগে উঠে।
ফ্যাকাশে মুখের পড়ে নিয়ন আলো চুমু এঁকে যায় রোজ।
পাশেতে স্টিলের ছোট বাটি আসন গেড়ে আছে
যার পাশে দুচার পয়সা ঝনঝন ঝগড়া করে।
একদিন স্বপ্নে আমি তার কাছে যাই
(স্বপ্নে যেতে যে পয়সা লাগেনা!)
শুনি ওর জীবনকথা স্বপ্নের ঘোরে
ও এখন এলবাট্রস হতে চায়
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে উড়বে একাকি
একদ্বীপ থেকে যাবে আরেক দ্বীপে
জাহাজের বাসিন্দারা স্বাগত জানাবে ওকে
সকালের অতিথিরা তৃপ্তি পাবে
ওকে বলবে সবাই,তুমি কি ভোরের পাখি?
যদি হও তবে রোজ এসে চুমু খেয়ে যেও!
রোজ এসে আমাদের একটু ছুঁয়ে যেও
তোমার নেশাময় নিষ্পাপ চোখ দিয়ে
ব্যাস এই টুকুই।
ও এখন এলবাট্রস হতে চায়
পাখা ঝাপটিয়ে অশনি মেঘ দূর করে দিতে চায়
প্রশান্তের নীল চিকচিকে আকাশ ছুঁতে চায়
সীমাহীন আনন্দে ভেসে যেতে চায় অচীন গর্ভে।
সারাদিন গৃহত্যাগী হয়ে উড়বে আকাশে
সন্ধ্যায় ফিরে যাবে আপন নীড়ের পানে
ছোট্ট টুকটুকে সংসার পাতবে সেথায়
থাকবেনা সেখানে কোনো ভয়ভীতি,সংকোচ ত্রাস
জমবেনা চোখের কোণেতে হতাশার গরল কালি
থাকবে শুধু সুখের সম্রাজ্য স্নেহ দিয়ে গড়া।
এই এলবাট্রস ছেলেটিকে আমি স্বপ্নে দেখি
একপায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফুটপাতে
রয়েছে তাকিয়ে পৃথিবীর মেঘযুক্ত আকাশের পানে
বুকে ওর এলবাট্রস পাখি পোষা
চোখে ওর প্রশান্ত মহাসাগরের জলকণা।
ও এখন এলবাট্রস হতে চায়
পাখা ঝাপটিয়ে মেঘ দূর করে দিতে চায়
প্রশান্তর নীল চিকচিকে আকাশ পেতে চায়।