করেবিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক কুমার ঘটকের ৪৩ তম প্রয়াণ দিবস
৪৩বছর পূর্বে তুমি এসেছিলে এক শীতের রাতে
বিজয় গড়ের ছোট্ট একখানি ঘরেতে
কিছুই ছিল না সেখান।
ঘরের ভেতরেই রান্না মেঝেতে ছিল শোয়ার বিছানা
বালিশের পাশে থাকতো লেনিনের রচনাবলী
আর ছিল মার্কসবাদের বইখান।
মাথার কাছে ছিল এক বান্ডিল বিড়ি আর দেশ্লাই
কত কষ্টের ছিল সেখানে দেখেছি নিজের চোখে।
ভাবি নি কখনো তোমায় দেখা পাবো এভাবে
সৌভাগ্য আমার পাশের বাড়িটি ছিল আমার
কুড়ি বছরের যুবক তখন আমি তোমার কথা শুনে ছিলাম একটু খানি
জানালার ফাঁকে দেখতাম তোমাকে কৌতুহলী চোখে
রবীন্দ্র সংগীত গান গাইতে তুমি উচ্চকণ্ঠে। আমার
প্রিয় গান ছিল তোমার কাছে ``আমার সোনার হরিণ চাই``
``আকাশ ভরা সূর্য তারা`` আর ছিল ``যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাংলো ঝরে``
টুকরো টুকরো করে গাইতে গানগুলো এভাবে
রবি ঠাকুরের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা ছিল তোমার কাছে।
একদিন তোমার ঘরে প্রবেশের সুযোগ এলো আমার কাছ।।।
কিছুক্ষণ তোমার কথা শোনার পরে
সাহস করে বলেছিলাম হঠাৎ করে
স্যার আপনার নাম ছড়িয়ে আছে ভারত বর্ষ ও তার বাইরে
তাই আশা করি আমরা আপনার কাছে ভালো ভালো ছায়াছবি  তৈরি করে
উপহার দেবেন দেশের কাছে
তাই আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি এভাবে
আপনি যদি এই অতিরিক্ত মদ খাওয়া ছেড়ে দেন
তাহলে ভালো হয় সবার কাছে।
এ কথা শোনার মুহূর্তে উত্তেজিত হয়ে বলে আমাকে
এক লাথি মেরে বের করে দেবো ঘর থেকে
সুচিত্রা সেন ও পারল না আমাকে মদ ছাড়তে
আর এই ছোকরা বলে কিনা মদ ছাড়তে।
এভাবেই দুই একটি ঘটনা ঘটেছিল আমার জীবনে
এর পর আসলো সেদিন চলে যাবার দিন।
৬ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬ রাত বারোটা পাঁচ মিনিট
চলচ্চিত্র জগতের আকাশে খসে পড়ল উজ্জ্বল তারা এভাবে।।