মধুকূপী ঘাসের স্তরে আমরা শুয়েছিলাম ওইদিন;
ওইদিন আমরা ঘাসের গায়ে জলের দাগের মতো
ধরেছি রোদের গুঁড়ো; শেফালির মুখ দেখে শরীর বিচ্যুত
মন আমাদের শূন্যে উঠে রংধনুর মতোই হয়ে গেছে রঙিন!
পাশের কাশবনে যেইসব পাখি লুকিয়ে শুনছিলো
আমাদের কথা, তারা বুঝি সানন্দে উড়ে এসেছিল
দূর থেকে- অনেক দূরের পাহাড়, বনের গহীন
থেকে, অথবা কোনো তরুণ নদীর পাড় ছেড়ে
আমাদের হৃদয়-নদীর কাছে, তার স্বচ্ছ-বিশুদ্ধ-স্বাধীন
জলস্রোতে ভেজাতে তাদের পালক, নড়েচড়ে
আনন্দে সমস্ত দেহ। ভোরের শীতের মতো মাথা রেখে
ঘাসের 'পরে মোনালিসা আকাশের দিকে চেয়ে থেকে
ওইদিন তুমি বলেছিলে- "আমায় কতটুকু ভলোবাসো?"
শরতের ডানায় হেমন্তের পালক গজিয়ে এলে
পৃথিবীর পাকস্থলীতে হজম হয়ে যায়নি যে পিকাসো
রাত, তারই মতো উর্বর, হয়ে আছে ঝলমলে
তোমার ভেনিস খচিত মুখ আমার বুকের ভেতর;
প্রাচীন বইয়ের হৃদয়ে যেমন জেগে থাকে পুরনো অক্ষর;
তবুও বলতে পারিনা কিছু; পারিনি সেদিনও; তবে পটভূমি
ঘুরে এসে প্রতিবার দুটো ধূসর চোখে যেমনি চোখ রাখো তুমি,
মাঠের লোমশ বুকে শুয়ে এমনই হয়েছিল ওইদিন
আবার- তেমনি এসেছিলে আমার চোখের ঘরে;
ঝিমানো আকাশের গা খামচে থাকা পৃথিবীর ক্লান্ত প্যারাফিন
আলোয় সেখানে দেখেছিলে আবার, তোমার পাশেই পথ হাঁটি হাজার বছর ধরে?