প্রিয়তমা আমি এখানে
জীবনের লেনদেন নিয়ে
এখনো দিব্যি বেঁচে আছি।
বেঁচে আছি আকাশের নীল হয়ে
কখনোবা শুভ্রতা নিয়ে।
তুমি ভেবেছ আমি হয়তো
জীবনানন্দের শঙ্খ চিল হয়ে গেছি
অথবা ভোরের কাক ;
হয়তো ভেবেছো কলমির গন্ধভরা জলে ভেসে যাচ্ছি।
আমি বেঁচেই আছি
একবুক দুঃখ নিয়ে, আবার আশাও আছে জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার সবুজ করুণ ডাঙ্গায় নগ্ন পায়ে হেঁটে যাওয়া বহুদূর।
প্রিয়তমা, জীবনে সব পেয়ে গেলে
জীবনের অর্থ থাকেনা
জীবনকে বুঝা যায়না।
মানুষের জীবনে অভাব ও দুখের খুবই প্রয়োজন।
আমি সারাদিন বসে থাকি অফিসে
সোনালীচুলো দেখারও সুযোগ হয়না,
তোমার চুলের গন্ধ নেওয়ার সময় কই?
সোনালী বিকেলগুলো আমার জীবন থেকে হারিয়েই গেছে
কদাচিৎ চোখে পড়ে, তখন সোনালী বিকেলের জন্য হৃদয়ে বাজে বেদনার সুর।
আমি বেঁচে আছি, বয়সও বেড়ে চলেছে নিঃশব্দে
সময় থেমে থাকেনা, বৃদ্ধ যাযাবরের মতো ছুটে চলে
ছুঠে চলে মহাযুদ্ধের ঘোড়ার মতোন।
বেঁচে আছি এ কথা একদমই ঠিক
কিন্তু কতকাল!
একদিন তো চলেই যাবো অনন্তকালের পথে
শিমুল তুলার ন্যায় উড়ে যাবো পতপত করে।
হয়তো একদিন ফিরে আসবো
ধানক্ষেতের ধানের উপরে চঞ্চল ফিঙ্গে হয়ে।
যদি আমার চলে যাবার পরও
তুমি বেঁচে থাকো
তবে আমায় খুঁজে নিবে
আমার বুকসেল্ফের প্রিয় বইগুলোর
পৃষ্ঠার ফাঁকেফাঁকে
অথবা কোন এক গাঁয়ে থুত্থুড়ে বুড়ো তেঁতুলগাছের ফাঁকে কোন এক
কিচিরমিচির করা পাখি দেখে।
আমাকে খু্ঁজে নিবে আমার ঔরসজাত সন্তানের মুখের ভাঁজে
এবং আমাকে খুঁজে নিবে আমার
সন্তানসম কবিতাগুলোর পঙক্তিমালায়।


বিঃদ্রঃ এখানে কবি জীবনানন্দের দু-একটি উপমা ব্যবহার করা হয়েছে পরোক্ষভাবে।
#বেনাপোল
১০/১১/২০২০