#মাঘ_ও_আমার_অস্তিত্ব
কোন এক কার্তিকে আমার জন্ম
জন্ম থেকেই ছিলাম হাড্ডিসার
আমার খুব প্রিয় প্রয়াত মানুষ আমাকে ফড়িং বলে ডাকতেন
ফড়িংয়ের মতই চঞ্চল ছিলাম আমি।
যুদ্ধ বিধস্ত দেশ
অভাবের তাড়না ছিলো সব পরিবারেই,
আমার বাবাও ব্যাতিক্রম ছিলেননা,
শিক্ষক হিসেবে নামডাক ছিল তার
আমার দাদা নাম রেখেছিলেন ভূষণ,
ভূষণ পন্ডিত নামেই ছিলেন পরিচিত
আমার বাবাকে দেখেছি শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে।
তাঁর জন্ম ছিলো হয়তো কোন এক মাঘে
মাঘ মানেই আমার কাছে ভয়
ভয়ংকর একটা দীর্ঘ সময়
কার্তিকে জন্ম হলেও আমার রক্তে মিশে আছে মাঘ
হাড্ডি মজ্জায় ঢুকে আছে সে মাঘ
মাঘ আসলেই আমি নির্লিপ্ত হয়ে যাই
হয়ে যাই জড়োসড়ো
রক্ত চুষে খাই এ মাঘ আমার
শরীরের সর্বাঙ্গে গরম কাপড়ও বরফ হয়ে যায়
আমি যেন হিমালয় হয়ে যাই
দার্জিলিং যেন আমার হৃদয়ে অনাহুতের মতো ঢুকে পড়ে
আমি কাঁপি, কাঁপতেই থাকি।
তবু কবিতার নেশা ছাড়ে না আমাকে
আমি কবিতা লিখি,  না কবিতা আমাকে লিখে
বুঝে উঠতে পারিনা।
বুঝে উঠতে পারিনা কার্তিকে জন্ম নেওয়া শিশু মাঘের নির্মম আঘাতে কেমনে জর্জরিত হই।
তবুও এ মাঘ সুন্দর, সুন্দর বলেই হয়তো আমাকে কষ্ট দেই।
পৃথিবীতে যত সুন্দর আছে, সব সুন্দর মানুষ কে কষ্ট দেয়
মানুষের জীবনে বড় ট্রাজেডি দু'টি
একটি - সুন্দর কে কাছে পেয়ে কষ্ট পায়
অন্যটি না পেয়ে কষ্ট পায়।
মাঘ অপেক্ষা করে বসন্তের
বসন্ত আসলেই এ বাংলা ভরে উঠবে সুন্দরে
সবুজ পাতায় ভর করবে সুন্দর
লাল ফুলে ভর করবে সুন্দর
এলোমেলো হাওয়ার ওড়াউড়িতেই
ভর করবে সুন্দর
সুন্দর এত কষ্ট দেয়, তবুও মানুষ সুন্দরের পূজারী।
আমিও সুন্দর ভালোবাসি
সে সুন্দর ভিতরের সুন্দর
ভিতরের সৌন্দর্য মানুষকে
বেশি সুন্দর করে তুলে।
বসন্তের ভিতরবাহির সবই সুন্দর
এ সুন্দর আমাকে ডাকে মাঘের কাঁপুনিতেও।
#বেনাপোল
০২/০২/২০২১