জীবনের তীক্ষ্ণ বাঁকে সেদিন বেজে উঠেছিলো
বিষাদের সকরুণ সুর ,
আজও আমি স্পষ্ট শুনতে পাই---
তার বেদনার্ত অনুরণন ;
স্বেচ্ছায় বরণ করে নিয়েছিলে
বেদনার সজ্জিত ডালি,
উপেক্ষিত হয়েছিল তোমার মানস দেবতা।
অর্ধশতকের ইতিবৃত্ত স্মৃতির স্মরণিকা বেয়ে
ফিরিয়ে নিয়ে আসো তোমার
মানস বেদির সোপানতলে,যে বেদিতে
আজো প্রতিষ্ঠিত তোমার সেই ইষ্ট দেবতা....
নৈবেদ্য সাজাওনি তুমি কখনোই দেবতা সম্মুখে ,
প্রসাদ পাওনি বলে---
অভিমানের যূপকাষ্ঠে আত্মবলি দিয়ে
নীরবতার মহাব্রত পালন করেছিলে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে।
তাচ্ছিল্যের অবকাশে তবু সে দেবতা
ছেড়ে কভু যায়নি দেউল ।
শুধু মাঝে মাঝে টলে উঠতো বেদিকার বুনিয়াদ ,
তবু ছিলো দেবতা অটল ।
রাজসূয় যজ্ঞ করে চেয়েছিলে হতে রাজেশ্বরী !
নির্বিকার দেবতা তবু ,করেনি সে অভিসম্পাত......
নবীনা এক পূজারিনী সজ্জিত বরণডালা হাতে লয়ে
ধীর পায়ে মন্দির প্রাঙ্গণে এসে
বরণমালা পরালো গলায় ।
তোমার হৃদয়-বীণায় বেজে ওঠে বিষাদের সুর ,
বেদনার অশ্রু লুকাতে চলে গেলে অন্তরালে,
অনেক অ-নে-ক--দূরে....
অশ্রু হয়তো লুকাতে চেয়েছো সেদিন, তবু
বিষাদের সুর মুছে ফেলতে পারোনি এতটুকু ।
সবার অলক্ষ্যে তাই চুপিসারে
মন্দিরের রুদ্ধ দ্বারে কড়া নেড়েছিলে ;
বঞ্চিত করেনি তোমায় সেদিনও সেই
উপেক্ষিত দেবতা তোমার।
তাই নিজের অস্তিত্ব সেদিন বিলিয়ে দিয়েছো
দেবতার সুসজ্জিত যজ্ঞের জ্বলন্ত হোমানলে ;
যজ্ঞের আগুনে তবু পুড়ে ফেলতে পারোনি তোমার
হৃদয়ের নীরব সেই বিষাদের সুকরুণ সুর----
সঞ্চারিত হয়েছ যা তোমার হৃদয়ে।
আজও বুঝি সেই সুর ছুটে চলে হয়ে গতিময়- - -
====সমাপ্ত====