ধাত্রী জননীর সুকোমল কোলে রয়েছি সুরক্ষিত,
তবু মাঝে মাঝে ব্যথিত হৃদয়ে মন হয় বিচলিত ;
জন্মভূমিকে ভুলতে পারিনা,মনে পড়ে বারেবারে,
নাড়ির বাঁধন হয় কি ছিন্ন ,ভোলা যায় কভু তারে?
তাই তার টানে গিয়েছিনু ছুটে চারটি দশক পরে ,
আপ্যায়িত হয়েছি সেথায় প্রতিবেশি ঘরে ঘরে ;
সেদিন যারা ছিলো তারুণ্যে,চলে গেছে নিজ-দেশ,
কচি-কাঁচা যারা ছিল সেইদিন,এখন পলিত কেশ।
কত যে বদল হয়েছ মায়ের , নতুনের ছড়াছড়ি ,
পুরাতন সব মুছে গেছে সেথা,নেই তার কাণাকড়ি ;
তটিনীর বুকে ভাসেনা সে তরী,সড়ক বিছিয়ে জাল--
সুদূরকে টেনে কাছে নিয়ে এসে,স্বচ্ছন্দে সে বহাল ।
খোলা প্রান্তর ঘিরেছে সবুজ, এ হৃদয় তবু ফাঁকা,
পারিনি মিলাতে কিছুই মনে যে পট রয়েছে আঁকা;
চারণ করেনা গবাদির পাল ; যন্ত্র---ফসল দিয়ে
চাষির গোলা খুশির হাসিতে দিচ্ছে আজ ভরিয়ে ।
পুরাতন সাঁকো নেই,পল্লীর পথে, ছুটছে যন্ত্র যান ,
পল্লীর গান গায়না তো চাষি,রাখাল তোলেনা তান ;
নতুনের ছোঁয়ায় তৃপ্ত হয়েও, ধাত্রী মায়ের টানে--
ফিরতে হলো এখানে,কী এক অনুভূতি লয়ে প্রাণে!
ওপারে গেলে এপারের টানে, কাঁটাতারে হই ক্ষত!
স্বরাজ মোদের বোঝেনা দুঃখ,কেঁদে মরি অবিরত ;
খণ্ডিত করে জন্মভূমিকে মুক্তি এনেছে যারা---
আমাদের চোখে খল হয়ে র'বে বহু প্রজন্ম তারা ।
====সমাপ্ত====