পৃথিবীটা যেন এক পাগলা গারদ ,
বিচিত্র পাগল হেথা , আছে পাগলের সভাসদ ।
কর্মে পাগল কেউ , ধর্মে পাগল , সুখেও পাগল হয় ,
দৈন্যে পাগল , ঋণে পাগল , পাগল সর্বময় ।
ভক্তিতে পাগল হয়ে কেউ কেউ গদগদ মনে—
প্রস্তর-মৃত্তিকা-ধাতব দেবতার সনে—
করে আলিঙ্গন ,
মনের আবেগ সে এ ভাবেই করে প্রশমন ।
পড়ায় পাগল , খেলায় পাগল , ভোজনে পাগল কেউ ,
আকণ্ঠ ডুবিয়া মদে গণনায় মত্ত পাগল সাগরের ঢেউ ।
ঘুম কাতুরে সেও পাগল ঠিক বেঠিকের হুশ থাকে না তার ,
দর্শনেতে পাগল হলে তাঁর খেয়ালটা বোঝা বড় ভার ।
পুণ্যলোভী পাগল হলে দায় দায়িত্বের থাকে না তার বোধ ,
মানবতায় পাগল হলে না মেনে সে কোন প্রতিরোধ—
মনুষ্যত্বের পূজা করে ,
প্রয়োজনে পরের তরে জীবনকে সে বাজি ধরে ।
পৃথিবীতে এমন পাগল থাকত যদি প্রতি ঘরে ঘরে —
স্বর্গ সুখে যেত এই পৃথিবীটা ভরে ।
ভালোবাসায় পাগল হলে কলঙ্কে তার থাকে না তো ভয় ,
ভালোবাসায় করা যায় এ নিখিল-বিশ্বটা জয় ।
নিজের প্রেমে মত্ত যে সে কাউকে ভালো বাসতে জানে না ,
সেও পাগল , অবুঝ নিজে , তাই সে কথা হয়তো মানে না ।
বিকৃত মানসিকতা পোষণ করে যারা —
ধর্ষক , ঘাতক হয় , কঙ্কালকেও ভালোবাসে তারা ।
প্রতিহিংসায় পাগল হলে বিভৎস সে অতি ভয়ঙ্কর ,
ধ্বংসলীলায় মত্ত তারা , পৃথিবীটা কাঁপে থরথর ।
সন্ত্রাস চালায় তারা বেহেস্তের মিথ্যে স্বপ্ন দেখে ,
ধর্ম-যুদ্ধ মনে করে কুশিক্ষা আর অপশিক্ষা শেখে ।
কর্মে পাগল হলে আপন-পর থাকে না তার হুশ ,
নিরলস কর্মী যাঁরা তাঁরাই প্রকৃত মানুষ ।
পাগল হলেও তাঁরা পৃথিবীর প্রগতির মূল কারিগর ,
তাঁরাই প্রকৃত  ধার্মিক সৎ পথে কর্ম যাঁরা করে নিরন্তর ।
     *********************************