সংবেদনের কাঠামোয় রচিত ছোট্ট একখানি রথ--
স্নেহের রসায়নে আর আদরের ঝর্ণাধারায় সিক্ত;
আদর ও মমত্ব বোধের গ্রন্থি দিয়ে
ধীরে ধীরে টেনে নিয়ে চলে মাতৃত্বের কোমল স্পর্শ ,
সাত দশক আগের এক প্রভাতী লগ্ন-ক্ষণ থেকে।
কাছের পিঠের প্রতিবেশী আর আপনজনের
হাসিমাখা রশি-বন্ধনের নিবিড় আকর্ষণে
ঘর-দোর আর প্রাঙ্গণের আনাচে কানাচে
গড়িয়ে গড়িয়ে চলতে থাকে সে রথের চাকা ।
তারপর---সময়ের গ্রন্থি বাঁধনে বন্ধন করা
রশির উন্মুক্ত প্রান্তটা পৌঁছে যায়
আম্র কাননে ঘেরা উন্মুক্ত পাঠশালার
আদর্শমণ্ডিত এক গুরুমশাইর কর-পল্লবে ।
অবিরাম অথচ মন্থর সে রথের চাকার গতি ,
পল্লীর আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে বেয়ে
সামনে এগিয়ে যেতে যেতে কত বিদগ্ধ জনের
হাতের কোমল স্পর্শে সমৃদ্ধ হয়েছে সে রথ ।
তারপর-----
প্রতিদিন নবতর পথে চড়াই উৎরাই পেরিয়ে
কখনো সোজা,কখনো ঘুরে ঘুরে এগোয় সে রথ ;
সমাজের অলিতে গলিতে ,
কিষাণের-শ্রমিকের, আচন্ডাল সমাজ বন্ধুর,
সভ্যতার প্রতিটি সোপানের পবিত্র ছোঁয়ায়
এ রথের গতির সচলতা আর ভ্রম্যমানতা
স্তব্ধ হয়নি কখনো ; আজও চলে এই রথ ।
বাহাত্তরের জীর্ণতার সীলমোহর পড়ে গেছে
রথের সমস্ত অবয়বে,
গতি তার আজ আরও মন্থর আরও শ্লথ ,
তবু এগিয়ে চলে সায়হ্নের সীমা রেখার উদ্দেশ্যে,
যেখানে মাসির বাড়ির চির শান্তি দেয় হাতছানি ।
উল্টোরথে আবার ফিরবে এ রথ ,
হয়তো নবতর কোনো সাজে
বিশ্ব-ভুবন জোড়া এই মন্দির মাঝে ।
======