গ্রামের সে পথটা আমি হারিয়ে ফেলেছি--
যেখানে ছিলো ভালোবাসার ছোট্ট কুঁড়েঘর ,
বন-বীথি ঘেরা আঁকাবাঁকা পল্লীর পথপাশে
বয়ে যেত ছোট নদী সাথে নিয়ে ঢালু বালুচর ।

একধারে ছিলো তার সুবিশাল খোলা প্রান্তর--
যেখানে মলয় হাওয়া বয়ে যেত সারাদিন-রাত,
নদীর ওপার থেকে দিবাকর হাসি মুখে উঠে
প্রতিদিন সকালে সে জানাতো শুভ সুপ্রভাত ।

পাখিদের কাকলিতে মুখরিত দিনভর;থেমে যেত
গোধূলির পরে ,সূর্য লুকাতো যেথা মাঠের ওপারে ;
গবাদির পাল চরাতো রাখাল সূর্যোদয়ের সাথে ,
সবুজে সবুজে ছায়া সুনিবিড় বনানীর ধারে ধারে ।

প্রতিবেশীদের উদার হৃদয় তেরো পার্বণ ঘিরে
উছলিত হতো আগমনি গানে সমাদরে আহ্বানে ;
ছিলোনা কালিমা, ছিলোনা অহম্ , হিংসা ও বিদ্বেষ ,
প্রতিযোগিতার ছিলোনা গরিমা সহজ সরল প্রাণে।

রঙের বিবাদ ছিলোনা গ্রামের নির্মল সুবাতাসে ,
বয়ে যেত শুধু প্রীতির লহরী সারাটা পল্লী জুড়ে ,
সহজ সরল জীবনধারায় না থাকুক বিলাসিতা ,
বাজতো সেথায় মিলন সানাই ঐকতানের সুরে ।

পিচ ঢালা পথ এঁকে বেঁকে গেছে যেথা থেকে
চূর্ণ করিয়া সেই শান্তির সুরচিত মসৃণ পথ ;
কোথায় হারিয়ে গেল প্রাণবন্ত গ্রামের সে সুখ ,
কোথায় যে উড়ে গেল শান্তির সেই পারাবত ।

প্রাণহীন শহরের বিষাক্ত বারুদের ঘ্রাণ
কংক্রিটের রাস্তা বেয়ে প্রবাহিত গঞ্জের পাড়ে ,
তারপর চেনাপথে চুপিসারে উঁকি দিলো এসে ,
তাইতো অচেনা লাগে সেই পথ পল্লীর ধারে ধারে ।

                  ====সমাপ্ত====