ছ্যাঁন্নত করে ওঠে বিজলী, তপুর কথা শুনে
ফুঁটন্ত তেল যেমন নাচে, স্পর্শে এসে বেগুনে
চোখ গনগনে অথচ শান্ত গলায় বলে চলে
এত মমতার কাম নাই; লাভ কি অত গলে?
ভদ্দর লোকের খাওয়া নাইক্কা ভাইজান; অ্যানো
যে কামে আইছো তাতেই সীমাবদ্ধ থাকো যেন,
অ্যানো তুই তোকারি-ই চলে; বেশ্যার ভদ্রতা কি?
ভদ্রতা দেখাইয়া ঢাইলোনা কেউ জ্বলন্ত আগুনে ঘি,
তপু কিঞ্চিৎ অপ্রস্তুত হয়; ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়
যেন বিজলীর অন্য এক রূপ; আজ দেখিতে পায়,
বিজলী স্বভাববিরূদ্ধ বেশ খানিকটা ধীর হয়ে আসে
বিছানা ছেড়ে তপুর পাশে রাখা টোলে এসে বসে,
ছলছলে চোখে ভেজা গলায় একদৃষ্টে যায় বলে
একজনের হাত ধরে ঘর ছেড়ে এসেছিলাম চলে,
কয়বছরের স্কুল প্রেমের পর বাবা-মা’র অমতে
ঘরের আশায় ঘর ছাড়লাম নিস্তব্ধ এক রাতে,
টিফিনের টাকায় খাইয়েছি কত; দিয়েছি হাতঘড়ি
সেই এখানে বিক্রি করে দিয়ে, আমায় গেল ছাড়ি,
এখানে আলো নেই, মানবতা নেই, শুধুই অন্ধকার
প্রবেশ বেলায়ই ফেলে এসেছি যা কিছু ছিল আমার,
শিক্ষা, সভ্যতা, প্রেম-ভালবাসা, মানবতার মর্মতা
এমনকি বাবা মা দিয়েছিলো যে নাম; ছেড়েছি তা,


বিজলী হাসে; গল্পটা বেশ, তোকে কেউ ছেড়ে গেছে
তাই এসে হামলে পড়িস্ বিক্রি হওয়া বেশ্যার কাছে,
তপু কি যেন বলতে চায়, বিজলী দেয় থামিয়ে
বলে; কি বলবি জানি, আমি ভাবিনা এ নিয়ে,
বিয়ে করতে চাস আমায়, তাইতো! হয়েছে সাড়া
জানি, কয়দিন ফাও খাবি; তারপর দিবি ভাগনতারা,
এ্যাঁতো কথার কাম নাই, শেষ কর; আইছস যে কামে
গল্পে গল্পে ঘন্টা গেলে, পোষাইবো? অত চড়া দামে?
তপু বলে, ভাবনা নাই, ঘন্টা যাক; টাকা ঠিকই পাবি
রোজইতো হেরে যাই, তোর কথার কাছে খাই “খাবি”,
বিজলী ফের অগ্নীশর্মা, বলে; আরে ঐ ব্যাটা জমিদার
এক পয়সাও মাগনা নেইনা, সাবধানে বলিস; খবরদার!
কি ভাবিস? এই বিজলীর বুকে সবাই পড়ে আছড়ে
চিকিৎসা করাতে আসে এই শহরের বড় এক ডাক্তারে,
প্রায়ই মেরামত করে দেই; সে নাকি বড় এক ইঞ্জিনিয়ার
প্রফেসর সাব করজোড়ে বলে, শিক্ষা নাকি তার দরকার,
পুলিশের এক কর্তা মাথা রেখে কোলে; বলে হাতজোড়ে
সাড়া দেশে আইন চালায় সে; চলেনা নাকি তার ঘরে।