সন্দ্বীপ — আমার জন্মভূমি
মাহমুদুল হাসান
সাগরের বুকে নীরবে দাঁড়িয়ে,
সবুজে ঘেরা এক নির্জন দ্বীপ—সন্দ্বীপ।
ঢেউয়ের ছোঁয়ায় জেগে ওঠে বালুকাবেলা,
আর মাটির গভীরে বাজে পূর্বপুরুষের কণ্ঠস্বর।
ভোরবেলা পাখিদের কলতানে ঘুম ভাঙে গ্রামের;
শিশির ভেজা পাতায় লেখা দিনের কবিতা।
নৌকো ভেসে চলে নদীর বুক চিরে,
স্বপ্নের মতো দীর্ঘ পথ পেরোয় পালের টানে।
ধানের শীষে রৌদ্র হাসে—
ঝিলিক দেয় সোনালি আলোয় শ্রমিকের ঘাম;
আকাশের নীলতায় লুকিয়ে থাকে
এক চেনা গন্ধ, এক চিরচেনা ভালোবাসা।
বাড়ির উঠোনে নারকেল গাছে হেলে পড়ে রোদ,
বাতাসে বাজে কাঁসার ঘণ্টা—
নামাজের ডাক কিংবা মা’র কণ্ঠ।
ঘরের কোণে চিরচেনা চৌকি,
প্রবীণ দাদার চোখে জমে থাকা সময়ের কুয়াশা।
প্রবাসে থাকা ভাইয়ের চোখে
সন্দ্বীপ এখনও আঁকা শিশির ধোয়া স্মৃতির পাতায়।
ঈদে ফিরে না এলেও,
মন পড়ে থাকে আম গাছের নিচে,
অথবা পুকুর পাড়ে শৈশবের খেলার ঘোরে।
সন্দ্বীপ তোর মাটি যে শুধু মাটি নয়,
এ এক মায়া, এক গন্ধ, এক নিঃশব্দ আহ্বান।
ঝড়, জোয়ার, দুর্যোগে ক্লান্ত হলেও তুই-ই আমার
চেতনায় খোদিত, অহংকারের কাব্যখানি।
সন্দ্বীপ, তুই শুধু একটি নাম নয়,
তুই আমার ইতিহাস, আমার ভাষা, আমার জন্মজয়।
২৩ মে ২০২৫, কালুরঘাট,চট্টগ্রাম