শেষ বিদায়
হাসান মাহমুদ


বাজারে বসে আছে হাতে লইয়া দৈর্ঘ্য মিটার
সারে তিন হাত দেহের লাগি কাটবে জামা কাপড়।
হইলে পুরুষ তিনটা কাপড় নারী হইলে পাঁচ
দর্জি হাতে কাটে তাঁতে করিয়া তা আঁচ।
মাইকে ডাকে নামটা ফাঁকে মরহুম-মরহুমা
ঘর জুড়িয়া বোনে কাঁদে,ভাইয়ে কাঁদে, কাঁদে দুঃখী মা।
আত্মীয় আসিয়া কিছু কাঁদে থাকিতে ভুলে
বাড়ির উঠোন গাছের তলে বড়ই পাতার গরম জলে।
হুজুর এসে কালাম পড়ে নিবে গোসলে
দশ টাকার ঐ সাবান দিয়ে গোসল করে দিবে গরম জলে।
শেষ বিদায়ে শেষ গোসলটা দিবে গোপন কোণে
খবর শুনে এলাকাবাসী ছুটবে জনে জনে।
কেহ যাবে গোর কাটতে ভীষণ ব্যথা বুকে
কেহ যাবে বাঁশ কাটিতে অশ্রু ভেজা চোখে।
কেহ ব্যস্ত কান্না ছেড়ে সকল আয়োজনে
কেহ আবার মুন্সি ডেকে তসবিহ টারে গুণে।
শেষ গোসলে শেষ কাপড়ে শেষ হবে দেখা
সবাই তখন যাবে থেমে মা কাঁদবেন একা।
জাদু আমার নয়নের আলো দিয়া গেলি ফাঁকি
সে দিন আর কেউ বুঝবে না, সুন্দর এই চালাকি।
শেষ নামাজে মাঠের মাঝে করবে সবাই ক্ষমা
গুণে গুণে তাকবির শেষে সওয়াব করবে জমা।
শেষ আমলে যাওয়া পথে ফিরবে না কেউ সাথে
একা তখন গেরে দিবে সকাল কিবা রাতে।
চার কুলেতে গোর খানা করবে বন্দী খাঁচা
উপর দিয়ে বাঁশ চাটাইয়ে করে দিবে মাচা।
শেষ বিদায়ে বাড়ি ফিরে সবাই যাবে ভুলি
জনম দুঃখী মা যে আমার দোয়া করবে দু-হাত তুলি।
বিদায় সবার নিকট ঘেঁষে করছে নানা খেলা
দুনিয়ার এই রং তামাশয় বাইছি রঙের ভেলা।