কালের খরস্রোতে বয়ে যচ্ছি অনন্তের পানে আমি গতিহীন
স্রোতের ধাক্কায় চলছি কিন্তু মাঝি আমি লগি বইঠা বিহীন
যখন ছোট নৌকার দিকে চাই, মনেহয় বসে আছি সুস্থির
আর যখন খরস্রোতা নদীর দিকে চাই, মনে হয়
এ পৃথিবীতে অবসরের অবসর কিছু নেই
মহাকাল কিছুক্ষণ আমাকে টানছে পিঠে তার গাধার মতন
গাধাটার প্রাপ্তির কিছু নেই, হারাতে ও নেই জানি এতটুকু দ্বিধা
বিলুপ্তির খাদে ফেলে দেবে যখন তখন


শুন্য হতে যাত্রা আমার সীমান্তে ও শূন্যতা
তবে কেন ব্যর্থ জীবন খুজে ফেরে পূর্ণতা ? মেলে কী তা?


তবে কেন এ জীবন বয়ে চলা—কেন চলা ?
কেন এত ভালোবাসা জীবনের প্রতি
কেন মৃত্যু ভয় হৃদয় কাপায়
কীসের লোভে এ জীবন বৃক্ষ সমস্ত শিকড় দিয়ে আঁকড়ে ধরে দেহ ভূখন্ড
সে কি আপন বৃন্তে ফোটাতে চায় দেহ কামনার রসে কোন সুগন্ধি ফুল
শিউলির প্রায়-
যা সন্ধায় ফুটে ভোরে ঝরে যায়-
এমন ছেলে খেলায় বুঝি কারো এতো... সাধ !


এর চেয়ে ভালো মৃত্যুর কাল স্রোতে ভেঙে যাক জীবনের সমস্ত বাঁধ
নাস্তির অনন্ত অন্ধকারে জীবন আমার হোক দ্রবীভূত
অস্তিত্বের অবগুণ্ঠন খুলে ।


তবু যেন কীসের প্রতি জীবনের কেন্দ্রে জাগে
মহাকর্ষের মত প্রবল টান
নিজের অজান্তে জীবনের মূলে জমে গাঢ় রসদ
জীবনের মরু বালুকায়
ক্যাকটাসে ফোটে মোহনিয় লাল ফুল
বেদুইন জীবন আমার দিগন্তে ছোটায় ঘোড়া


বুঝি গ্রিষ্মের তারা ভরা আকাশ
আমার পত্র পল্লব গুলোকে জীবনের পথে ডাকে
ঘাস ফুলে ছেয়ে থাকা আর ফসল ফলানো মাটি
আমার মূলে দেয় জলের যোগান
সবুজ বনের পাখিরা শোনয় জীবনের গান
ফুলের মদির গন্ধ, প্রজাপতির মাতাল চলা
আমাকে দিয়ে যায় জীবনের গভিরতর স্বাদ
আর নদী ও নারী একি সুরে কথা কয়
বলে যেওনা যেওনা ছেড়ে
শেষে নিজেই ছেড়ে যায়
শুধু রেখে যায় ভাঙা গড়ার চিহ্ন আর ভালোবাসার বালুচর
যেখানে স্বপ্ন তাসের ঘর গড়ে গড়ে কেটে যায় আধেক জীবন
সমস্ত প্রকৃতি তার অগণিত বাহু মেলে ডাকে
জীবনের কোমল কঠিন কোলে
পৃথিবীর অসংখ্য রূপ রস ছোঁয়া গন্ধ গান
জীবন আমার করেছে হালকা ততটা
যাতে নাস্তির সিসা ভারী জলে
না ডুবে ভেসে থাকে অস্তিত্ব আমার


তবু জানি একদিন জীবনের স্বাদ ফুরাবে সকলি
ভবিস্যত মধ্যান্যের ছায়ার মত মরে যাবে পায়ের তলায়
তখন কষ্ট আর অতীত স্মৃতির ভারে ডুবে যাবে অস্তিত্ব আমার
নাস্তির ভয়াল সাগরে
মৃত্যুর ওপারে
জানি কিছু নাই
তবুও জীবন জেগে রয়
এমনিত হয় !!