পূর্বসূত্রঃ
[ আমিঃ এতো তাড়াতাড়ি কি করে বুঝবা, .........এসব সম্পর্কে সাময়িক
       আবেগী উত্তেজনা থাকে কম কিন্তু সম্পর্ক অনেক গভীর, প্রশান্ত হয় ।          
       এই দেখো তোমাকে তুমি করে বলে ফেলেছি...
      
.......................................................................................

.......................................................................................  

আমিঃ ধন্যবাদ, তুমি বলার জন্য। আচ্ছা, তুমি অবসরে কি করো ?
      ..........................................যত কঠিনই হোক না কেন
       বরফ একসময় ঠিকই গলবে । কোন ভুল নেই । বহু পরীক্ষিত। ]  

ফেসবুক কথনঃ পর্ব ০৩ ফেসবুক ও নতুন সম্পর্ক  


চতুর্থ পর্বঃ নাম দিয়েছি “বউ” ।

( বাংলা সিনেমা স্টাইল )


প্রিন্সেসঃ অবসরে ঘুমাই। হি হি হি !!!
       ( মহা ফাজিল টাইপ বলে মনে হচ্ছে । আমার বলের স্পিন
       কাজে লাগিয়ে আমাকে  প্যাডল সুইপ খেলার চেষ্টা করছে ।)

আমিঃ ঘুমানো ছাড়া আর কি কি করো ?
        ( খেলা চলতে থাকে, আমি বোলিং অব্যাহত রাখি। )

প্রিন্সেসঃ দাঁত ব্রাশ করি, চুল আচড়াই, বিছানা ঝাড়ু দেই,
         একুরিয়ামের মাছ গুলোকে খাবার দেই ...... আরও
         শুনতে চাও ? হি হি হি !!!
       ( এ তো দেখছি শুধু ফাজিল না, ফাজিল অফ দি গ্রেটেস্ট
        অর্ডার, তবে সেন্স অফ হিউমার ভালো মনে হচ্ছে, সে যা
         করছে ইচ্ছে করে, জেনে বুঝে, আমাকে বিভ্রান্ত করার
         জন্য করছে, জমবে বৎস,তবে নো তাড়াহুড়ো । )

আমিঃ প্রিন্সেসরা বিছানা ঝাড়ু দেয়, এমন তো কখনো শুনি নাই,
        তাদের তো অনেক দাস দাসী থাকে ! তা কোন রাজ্যের
       প্রিন্সেস তুমি আদিয়াত ?
      ( আমি তার ব্যাটিং দুর্বলতার সুযোগ নেই, তাকে এল বি
        ডব্লিউর ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করি । দেখা যাক সে ফাঁদে
        পা দেয় কিনা । )

প্রিন্সেসঃ আব্বুর মনের রাজ্যের । আব্বু আমাকে “প্রিন্সেস” ডাকে
         তাই আমি প্রিন্সেস । আম্মু ও কাছের বন্ধুরা “আদি” ডাকে।
   ( সে সফট হ্যান্ডে রক্ষণাত্মকভাবে আমার বল সামাল দেয় । )


আমিঃ হুম ......আর কে কি ডাকে ? তো আমি কি ডাকবো ? কি
       ডাকলে তুমি খুশী হবে ?

প্রিন্সেসঃ স্কুলে আমার খুব প্রিয় এক স্যার ছিলেন উনি আমাকে “ছুটি”
         নামে ডাকতেন। উনার প্রথম মেয়েটি নাকি সাত বছর বয়সে
         পানিতে ডুবে মারা যায় । তার নাম ছিল ছুটি, এই মেয়ের
         শোকে স্যারের স্ত্রীর মাথা নষ্ট হয়ে যায়, উনি তখন পুরো
         উন্মাদ । কোন এক মেন্টাল আস্যাইলামে নাকি ছিলেন ।
        
আমিঃ  সত্যি দুঃখজনক । এটা কত বছর আগের ঘটনা ? তোমার
         সেই স্যার এখন কোথায় আছেন ? যোগাযোগ আছে ?

প্রিন্সেসঃ না যোগাযোগ নেই । একবার খোঁজ নিয়েছিলাম । শুনেছি
          স্যার নাকি চাকরী ছেড়ে দিয়ে উনার অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে
          গ্রামের বাড়ীতে চলে গেছেন ।  

আমিঃ কেন জানিনা । এই পৃথিবীতে ভালো মানুষ গুলোই বেশী
        কষ্ট পায় । খারাপ মানুষেরা বহাল তবিয়তে নির্লজ্জের
        মতো সুখে থাকে ।

প্রিন্সেসঃ তবে আমার মনে হয় এরও কোন বিশেষ উদ্দেশ্য আছে ।

আমিঃ হ্যা, সৃষ্টিকর্তা তার প্রিয় মানুষদের বিপদে ফেলে তাদের
       ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরীক্ষা নেন । শেষ পর্যন্ত শেষ বিচারে
       বিজয়ী হন এই সব মানুষেরাই । উনারও তাই হবে ।

প্রিন্সেসঃ অবশ্যই । উনার মত উদার মনের ভালো মানুষ আজকাল
         খুব কম দেখা যায় ।  

আমিঃ আমরা উনার মঙ্গলের জন্য মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা
       করতে পারি । তোমার এরকম আর কোন ঘটনা আছে ?

প্রিন্সেসঃ হ্যা । আমার স্কুল জীবনের সবচেয়ে কাছের যে বান্ধবী ছিল ও
          আমাকে একটা নাম দিয়েছিল ।

আমিঃ কি ? কি নাম দিয়েছিল তোমার সেই বান্ধবী ?

প্রিন্সেসঃ উহু ... সেটা বলা যাবে না । ঐটা ওর আর আমার ব্যক্তিগত
         ব্যাপার। ওর নাম ছিল সুহিন আমিও ওকে একটা নাম
         দিয়েছিলাম । ও এখন স্টেটসে আছে হায়ার স্টাডিজের
         জন্য ।      

আমিঃ আমি কিন্তু আমার একটা প্রশ্নের উত্তর পাইনি ।

প্রিন্সেসঃ কোন প্রশ্ন ?
          
আমিঃ আমি তোমাকে কি নামে ডাকবো ? কি ডাকলে
       তুমি খুশী হবে ?

প্রিন্সেসঃ তুমি বরং আমাকে নতুন একটা নাম দাও । ছোটবেলায়
        আমার অনেক শখ ছিল আমার অনেক অনেক নাম
        থাকবে, সবাই আলাদা আলাদা নামে ডাকবে ।  
       ( এইবার আমি উল্টা টাঙ্কিত, কয় কি মাইয়্যা, মাথা
         ঠিক আছে তো ! আমি কোন পাগলের পাল্লায় পড়ি নাইতো !
         একদিনের পরিচয়েই আমি তার নতুন নাম দেবো !
          এটা আবার নতুন কোন খেলা নয়তো ।)
  
আমিঃ নতুন নাম দেবো, অনুমতি দিচ্ছ তো ? ভাল করে ভেবে
       দেখো পরে কিন্তু কথা ফিরিয়ে নিতে পারবে না বলে দিচ্ছি ।
       ( সুযোগ চিনতে আমার ভুল হয় না তবুও আমি নিশ্চিন্ত
         হয়ে নিতে চাইছি। ধীরে বৎস ধীরে। সুযোগ নিজে তোমার
         দিকে হেটে হেটে আসছে। তাড়াহুড়ো করে ভুল করো না।)      

প্রিন্সেসঃ কেন ? কেন ? কি হয়েছে ? ঠিক আছে, আগে বল । শুনি
         তারপর ভেবে দেখব ।

আমিঃ না আগে বলা যাবে না । একবারেই ডাকবো । যদি চাও
        তাহলে বল তা নাহলে এই বিষয়টা এখানেই শেষ ।
       ( আমি তাকে আমার ইচ্ছা মত চলতে বাধ্য করি । )

প্রিন্সেসঃ আচ্ছা ঠিক আছে, ডাকো ।
        ( সে আমার পাতা ফাঁদে পা দেয় । মেয়ে মানুষ বলে কথা
         কৌতুহলের কাছে অনিচ্ছা হেরে গেলো। এইবার আমার চাল । )

আমিঃ আমি তোমার নাম দিয়েছি “বউ” ।
      ( বাঙ্গালী মেয়ে সে যত আধুনিক বা শিক্ষিত হোক না কেন
       পছন্দের পুরুষের কাছ থেকে বউ ডাক শুনে প্রভাবিত হবেই ।
       কিছুক্ষণ চুপ হয়ে যাবে । এবং তারপর মনের ইচ্ছের বিরুদ্ধে
       হলেও প্রতিবাদ জানাবে নিজের নারী অহং টিকিয়ে রাখার জন্য।)

বিদ্রঃ সাময়িক বিরতির পড় আজ “ফেসবুক, আমি এবং একজন প্রিন্সেস আদিয়াত” লেখাটির “চতুর্থ কিস্তি” পোস্ট দিলাম । আগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তি পোস্ট দিয়েছিলাম । যারা ঐ কিস্তি তিনটি পড়েননি তাদের অনুরোধ করবো পড়ে নিতে নাহলে পুরোপুরি রস আস্বাদন করতে অসুবিধা হবে। লেখাটা অনেক বড় হবে । লেখার কাজ চলছে । ১০০ পৃষ্ঠা + লেখার ইচ্ছে আছে, মাল, মসলাও রেডি । আপনি ঠিকই শুনেছেন ১০০ পৃষ্ঠার একটি কবিতা । ভবিষ্যতে হয়তো একটি কবিতা দিয়েই একটি বই হলেও হতে পারে। সেটা নির্ভর করছে আপনাদের ভালো লাগা ও সমর্থনের উপর। কয়েকটি ধাপে বাকি অংশ গুলো আসবে । এটি মূলত ফেসবুক নির্ভর নতুন ঘরানার একটি গদ্য কবিতা । প্রথাগত কবিদের অনেকের কাছেই এটাকে কবিতা ভাবতে কষ্ট হতে পারে । এটা লিখতে গিয়ে আমারও একটি নতুন ধারা বলে মনে হয়েছে । প্রথম দুইটা পর্বে যে গদ্য কবিতার কথা বলেছিলাম এটা সেই গদ্য কবিতা। তাই তালমিল বা ছন্দের ভেতর নয়, কাব্যিকতা খুঁজতে বলবো ভাষার ব্যবহার, উত্তর প্রতি উত্তর ও স্বগতোক্তির ছন্দের ভেতর। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন । সাথে থাকুন। ধন্যবাদ ।

মন্তব্যঃ  এখানে শিক্ষকের যে ঘটনাটা বর্ণনা করা হয়েছে আমার নিজের জীবনে এমন একটি ঘটনা আছে, আমার স্কুলের অনেক প্রিয় এক স্যার, শফিক স্যার, আমাকে তার পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ছেলের নামে “জনি” ডাকতেন। তার ছেলেটি নাকি আমার বয়েসী ছিল, দেখতেও নাকি আমার সাথে মিল ছিল । বাকি ঘটনাটাও অনেকটা একই রকম ।      


রচনাকালঃ ১৮-০৮-২০১৩                                                                (চলমান)