নিস্তব্ধ দুপুরের ঘড়ি, চারদিক শুনশান, মৃদুমন্দ হাওয়া
বয়ে যাচ্ছে, আমি নির্জন রেস্ট হাউসের কফি লাউঞ্জে
বসে আছি, প্রকৃতি ঘেরা কফি লাউঞ্জে একাকী আমি,
চারপাশে কেউ নেই, তবুও আরো অনেকেই আছে।
এই কফি লাউঞ্জটা আর দশটা বাণিজ্যিক হাউসের
মতো নয়, ঝকঝকে তকতকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নয়,
যেমন হয় আর দশটা বাণিজ্যিক কফি শপ, এখানে
ওখানে ছড়িয়ে আছে ছেড়া ঠোঙা, ওয়ান টাইম কফির
কাপ, কয়েকটা খালি কোল্ড ড্রিঙ্কসের বোতল; বহু
মানুষের উপস্থিতির সাক্ষ্য বহন করছে এইসব উচ্ছিষ্ট,
আরও অনেকেই না থেকেও রয়ে গেছে এই কফি লাউঞ্জে ।
বহু মানুষের আসা যাওয়ার সাক্ষ্য বহন করছে এই কফি
লাউঞ্জ , সেইসব মানুষেরা না থেকেও আছে, লাউঞ্জ
বয়ের কাজে ফাঁকি দেওয়ার নিদর্শন বুকে নিয়ে বহু
মানুষের উপস্থিতির সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে কফি লাউঞ্জ ।

আমার টেবিলের উপর শুয়ে আছে এক গুচ্ছ বাসী ফুল,
পরিত্যক্ত হাসনা হেনা যেন রয়ে গেছে কোন অজানা
কাহিনীর সাক্ষী হয়ে, কারো নিছক হেঁয়ালি, অথবা
কোন প্রেম অথবা প্রত্যাখানের গল্প শরীরে বহন করছে
অবহেলে ফেলে যাওয়া এই বাসী হাসনা হেনা গুলো ।

অনেকেই এখানে এসেছিলো, চলেও গিয়েছে একসময়
কেউ এখানে নেই, তবুও অনেকেই এখানে আছে, তাদের
নানামুখী ব্যক্তিগত আলাপ চারিতা, শরীরের ঘাম, ফুসফুসের
কার্বন ডাই অক্সাইড সবকিছুর সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে এই
কফি লাউঞ্জ, এখন আমি আছি, এক সময় থাকবো না ।
হয়তো আসবে নতুন কেউ, সব পরিষ্কার হয়ে যাবে তবুও কোন
কিছুই মিথ্যে হয়ে যাবে না, আসা যাওয়া চলবে, কফি লাউঞ্জটা
শুধু এইসব জীবনের গল্পের নীরব সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকবে
অনন্ত কাল, এক এক সময় এই কফি লাউঞ্জটা যেন জগৎ
সংসারের প্রতিকল্প হয়ে ওঠে, মানুষ এখানে দুদিনের অতিথি,
যে যার নির্ধারিত সময়ে, নির্দিষ্ট কাজে আসে , কাজ শেষে
ফিরে যায় কোন অজানা গন্তব্যে,  কফি লাউঞ্জটা থেকে যায় ।