সেই ইমারতের গহন গোপনীয়তা নিয়ে চারদিকে শুধু
চাপা নিরব ভয়ার্ত ফিসফাস ধ্বনি, বোবা বাতাসে শুধু
নিরব কান্নার মত চেপে ধরা একঘেয়ে গোপন কানাকানি ।    

আমার আটপৌরে বাঙ্গাল সত্ত্বাকে বিদেশী কুকুরের মত
চরম অভিজাত রোমাঞ্চকর ব্যাপারটি কেবলই টেনে নিয়ে
চলে চুম্বকের অসম বিপরীত মেরুর পারস্পরিক আকর্ষণের
মত, বিদেশী কুকুরের শ্রেণীতে বিবেচ্য এলসেসিয়ান, টেরিয়ার,
শেফার্ড কিম্বা, হাউন্ড আরও বিশেষ করে বললে রক্ত লোলুপ
ব্লাড হাউন্ড আমার অবচেতনে ঐ অদেখা কুকুরের প্রতিভু হয়ে
মাংসাশী হানা দেয় জেগে থাকা নির্ঘুম আধারের কালরাতে,    
মাঝে মাঝে রক্তহীম ভয়কেও ছাপিয়ে যায় সহজাত কৌতুহল,
আমি প্রতিবার ঐ পথে আসা যাওয়ার সময় নির্ভুল চেয়ে
চেয়ে দেখি সে মৃত্যুর কালো জমিনে রক্তের লাল ছোপ
ছোপ কালিতে রঞ্জিত লাল চোখময় সে বিপুল রহস্য
সাইন বোর্ড “বিদেশী তিনটি কুকুর হইতে সাবধান” ।

আমার মজ্জাগত চেতনায় জন্মলগ্নের অস্পষ্ট স্মৃতির মত
বারবার ফিরে ফিরে আসে ঐ আধার কালোর জমিনে লেখা
রক্তলাল বিভীষিকাময় সাইন বোর্ড “বিদেশী তিনটি কুকুর
হইতে সাবধান”, ঐ ক্ষুধিত পাষাণ সাইন বোর্ডের যেন নিজস্ব
অশুভ আত্মা আছে, যে ক্রমাগত বয়ে চলা বাতাসে ভীতিকর
কাঁপন তুলে একঘেয়ে  করুন সুরে যেন শুধু বলে চলেছে  
সাবধান, সাবধান, খুব সাবধান, সাবধান, খুব, খুব, খুব ।  

ঐ খোলা রাস্তা ও রাস্তা শেষের অজানা গন্তব্যের মতো,
ঐ ইটলাল আধিভৌতিক প্রাসাদ ও প্রাসাদের গভীরে
লুকানো গোপনীয়তার মত, প্রাসাদের দেয়ালে লটকানো
অভিশপ্ত জীবন্ত সাইনবোর্ডের হুমকির মত মানবজীবন ও
জগতের বহু গোপনীয়তা আজও রয়ে গেছে অজ্ঞাতকুলশীল ।

বিদ্রঃ প্রথমে তিন পর্ব হবার কথা থাকলেও পরিপূর্ণতার স্বার্থে একটু বাড়াতে হয়েছে তাই এই লেখাটি পাঁচ পর্ব হয়েছে । আজ চতুর্থ পর্ব প্রকাশিত হল । পঞ্চম ও শেষ পর্ব সামনে আসবে।