প্রিয়তা, যে দুর্বিনীত উত্তরীয় বাতাস কোন এক ঘুমভাঙা
কাঁক ভোরে তোমার নাজুক করতলগুচ্ছের কাঙ্খিত গোপন
আঁধার ছুয়ে নিঃশেষে হারিয়ে গিয়েছিল সুদুর নিঃসীমের বুকে,
সে আজ আবার স্বরূপে ফিরে আসছে দুর্বিনীত ঝড় হয়ে ।
সুদীর্ঘ যাত্রায় সে বয়ে এনেছে বহু জীবনের নিজস্ব ঘ্রান,
বয়ে এনেছে বহু জন্মের জমে থাকা অন্ধকারের ভ্রূণ,  
কঙ্গো তীরের মানুষ খাদক বর্বর মানুষের দীর্ঘশ্বাস,
আজন্ম বরফ ঢাকা দক্ষিন মেরুর তরুন শ্বেতভল্লুক
দম্পতির শারীরিক ভালবাসাবাসির আদিমতম উষ্ণতা ।

প্রিয়তা, কঙ্গো নদীর জলে যে আদিবাসী কালো মানুষটি
খুইয়েছিল তার বেঁচে থাকার আদিম বিশ্বাস – তার দেহের
মৃত্যু শীতলতার রাজসাক্ষী এ বাতাস আজ অসভ্য রেড
ইন্ডিয়ানদের আদিম রক্তের শিকারী হিংস্রতার ছোঁয়া নিয়ে
হয়েছে আরও ভয়াল । সে আজ আবার ফিরে আসছে
আমার আত্মার দুয়ারে । এ বাতাস আজ বড়ো নিষ্ঠুর,
আজ বড়ো ভয়াল । সে কেবলই কেড়ে নিতে জানে ।

প্রিয়তা, বিবাগী উত্তরীয় বাতাস আজ আমাকে ফিরিয়ে দিল
তোমার স্মৃতিময় ঘ্রান । বহু সময়,  বহু পরিভ্রমন, বহু ঘটন
অঘটনের পরও তোমার শরীরের পুরনো সেই ভালোলাগা
সুগন্ধি আজও অক্ষত, আজও অটুট । এও তার আরেক
নিষ্ঠুরতম খেলা । আজ তুমি আর আমার নও, আমার মনের
ছায়াপথ আজ তোমার উদয়হীনতায় নিকষ আঁধার ঘেরা ।
তুমি হীনা আমার নিঃসঙ্গ অনুভবের সঙ্গী আজ কেবলই কষ্ট ।